ভর্তিজটে সরানো হল টিএমসিপির সভানেত্রীকে

কলেজের ভর্তি-চক্রে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার দলীয় ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রীকেই সরিয়ে দিলেন। তাঁর নির্দেশে বুধবার সন্ধ্যায় সভানেত্রী জয়া দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বাকি পদাধিকারীরা অবশ্য স্বস্থানেই রয়েছেন। দিন দশেকের মধ্যে সংগঠনের নতুন সভাপতি বেছে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০৫:৪৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি জয়া দত্ত। ফাইল চিত্র

কলেজের ভর্তি-চক্রে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার দলীয় ছাত্র সংগঠনের সভানেত্রীকেই সরিয়ে দিলেন। তাঁর নির্দেশে বুধবার সন্ধ্যায় সভানেত্রী জয়া দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বাকি পদাধিকারীরা অবশ্য স্বস্থানেই রয়েছেন। দিন দশেকের মধ্যে সংগঠনের নতুন সভাপতি বেছে নেওয়া হবে। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন।

Advertisement

রাতে জয়া অবশ্য বলেন, ‘‘দায়িত্ব থেকে সরানোর কথা আমায় কেউ জানাননি। আমি আমার মতো করে টিএমসিপির ভাবমূর্তি ভাল রাখার চেষ্টা করেছি। এখন দলীয় নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই শিরোধার্য।’’

কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের(টিএমসিপি)-র বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে পড়ুয়া ভর্তি করানোর একের পর এক অভিযোগ উঠছে জেনে কিছুদিন আগেই নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ছাত্র রাজনীতির নামে কোনও ভাবেই টাকা নেওয়া তিনি বরদাস্ত করবেন না। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারির পরের দিন থেকে কলেজে তোলাবাজি কমার বদলে ক্রমাগত তার মাত্রা ছাড়াতে থাকে। শেষ পর্যন্ত গত শনিবার কলেজে তোলাবাজি ঠেকাতে পুলিশ নামানোর নির্দেশ দিতে হয় মমতাকে। এমনকী, তোলাবাজির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কলেজ পরিদর্শনেও যান মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

এই অবস্থায় সোমবার থেকে তৃণমূল ভবনে কলকাতার টিএমসিপির এক-একটি জেলা নেতৃত্বকে ডেকে বৈঠক শুরু করেন জয়া। দলীয় নেতৃত্বের ‘অনুমোদন’ না নিয়েই ওই বৈঠক করা হয়েছিল জেনে অসন্তুষ্ট ছিলেন মমতা। এরই মধ্যে এ দিন টিএমসিপির তরফে জানানো হয়, মণীন্দ্রচন্দ্র, শ্রীশচন্দ্র এবং ক্ষুদিরাম কলেজের ছাত্র ইউনিট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ভর্তি-প্রক্রিয়ায় ওই কলেজগুলি থেকে তোলাবাজির অনেক অভিযোগ এসেছে বলে ইউনিটগুলি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় টিএমসিপির রাজ্য নেতৃত্ব। জয়া বলেছিলেন, ‘‘কলেজগুলির ছাত্র সংসদ টাকা তোলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকায় ইউনিট ভাঙা হল।’’

আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলন কই, কদর শুধু দাদাগিরির

এ দিন বিকেলে বিষয়টি জানতে পারেন মমতা। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের ‘অজ্ঞাতসারে’ টিএমসিপি কী ভাবে এই তিনটি কলেজের ইউনিট ভাঙার সিদ্ধান্ত নিল, তা নিয়ে ক্ষোভও ব্যক্ত করেন তিনি। এবং অব্যবহিত পরেই জয়াকে দায়িত্ব থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও হয় মুখ্যমন্ত্রীর। ছাত্র সংগঠনের নতুন সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত পার্থবাবুই তার কাজকর্ম তদারক করবেন। দলের আরও সিদ্ধান্ত, শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া কোনও শাখা সংগঠন তৃণমূল ভবনে নিজেদের উদ্যোগে কোনও বৈঠক করতে পারবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন