TMC

সরিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক, জিতলেন সেই উপপ্রধান

গত ডিসেম্বরে কাঁথির সভায় যাওয়ার পথে মারিশদায় থমকেছিল অভিষেকের কনভয়। গ্রামে পা রেখে শুনতে হয়েছিল নালিশ— পঞ্চায়েত কাজ করছে না।

Advertisement

কেশব মান্না

মারিশদা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ ০৬:০২
Share:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তাঁকে অপসারিত করেছিলেন খোদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার ভোটে দলের টিকিটও জোটেনি। নির্দল হিসেবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কাঁথির মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল। জিতেও গিয়েছেন তিনি। মারিশদা পঞ্চায়েতও হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। এ বার সেখানে পদ্ম ফুটেছে।

Advertisement

গত ডিসেম্বরে কাঁথির সভায় যাওয়ার পথে মারিশদায় থমকেছিল অভিষেকের কনভয়। গ্রামে পা রেখে শুনতে হয়েছিল নালিশ— পঞ্চায়েত কাজ করছে না। কালক্ষেপ না করে অভিষেক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই এলাকার প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল তৃণমূল সভাপতিকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। সেই মতো তৎকালীন প্রধান রাম মণ্ডল, উপপ্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল এবং অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি গৌতম মিশ্র ইস্তফাও দেন।

এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ঘাসফুলের প্রতীক না পেয়ে ঝুনুরানি মালবাড়ি বুথে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রতীক ছিল পাকা আম। বিজেপি প্রার্থী রাজলক্ষ্মী মণ্ডলকে ৬২ ভোটে হারিয়েছেন তিনি। গৌতমও পঞ্চায়েত সমিতির ১৬ নম্বর আসনে নির্দল হিসেবে লড়েছিলেন দু’টি পাতা, একটি কুঁড়ি প্রতীকে। তিনি অবশ্য বিজেপির রাজশেখর মণ্ডলের কাছে ২৩০ ভোটে হেরে গিয়েছেন। পাশাপাশি মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। ১৯৮৩ সালের পরে এই প্রথম কংগ্রেস বা তৃণমূলের বাইরে কোনও দল এখানে জিতল।

Advertisement

১৭ আসনে মারিশদা পঞ্চায়েতে বিজেপি ৯টিতে জিতেছে। একটিতে জয়ী হন বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। আর তৃণমূল জিতেছে ৬টি আসনে। আর একটিতে নির্দল ঝুনুরানি। এই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সমিতির ৩টি আসনের মধ্যেও দু’টিতে জিতেছে বিজেপি। গোটা কাঁথি-৩ ব্লকেই বিজেপির ফল এ বার ভাল। ৭টি পঞ্চায়েতের ৩টিতে জিতেছে তারা।

স্থানীয় বোর্ডের যে বুথে গিয়ে গ্রামবাসীর অভাব-অভিযোগ শুনেছিলেন অভিষেক, সেখানেও হেরেছে তৃণমূল। ওই বুথে তৃণমূল প্রার্থী দেবেশ নায়ককে ৮৮ ভোটে হারিয়েছেন বিজেপির স্বরূপ নায়ক। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘মারিশদার মানুষ যে চোরেদের সমর্থন করবেন না, সে কথা আগেই কোম্পানির মালিকপক্ষকে জানিয়েছিলেন। ভোটেও তৃণমূলকে তাড়িয়েছেন গ্রামবাসী।’’ বিধায়ক তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তরুণ মাইতি পাল্টা বলেন, ‘‘জেলার অন্যত্র এবং গোটা রাজ্যে তো মানুষ আমাদের দলকেই সমর্থন করেছেন। আসলে মারিশদায় বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে। ওই অঞ্চল কেন হাতছাড়া হয়েছে, আমরা পর্যালোচনা করব।’’

পুরনো দল তৃণমূল বা এ বার গ্রামে জয়ী বিজেপিতে কি যোগ দেবেন? ঝুনুরানি ‘‘ব্যস্ত আছি’’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে গৌতম বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। বংশপরম্পরায় ডানপন্থী রাজনীতি করি। দল ছেড়ে কোথাও যাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন