ছদ্মবেশে থেকেই ফেসবুকে জঙ্গিপনা

খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরে এ রাজ্যে জেএমবি-র সংগঠনের কথা জানা গিয়েছিল। উঠে এসেছিল বেশ কিছু বেআইনি মাদ্রাসার কথাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০২:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিনে তাদের কেউ করত রাজমিস্ত্রির কাজ, কেউ বা সাজত ফেরিওয়ালা। আর সন্ধ্যা হলেই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে বসাত মগজ ধোলাইয়ের আসর! গোয়েন্দাদের দাবি, এক বছর ধরে হাওড়ার উলুবেড়িয়া থেকে এ ভাবেই সংগঠন বাড়িয়েছিল নব্য জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদ্য-ধৃত চাঁইয়েরা।

Advertisement

খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরে এ রাজ্যে জেএমবি-র সংগঠনের কথা জানা গিয়েছিল। উঠে এসেছিল বেশ কিছু বেআইনি মাদ্রাসার কথাও। সেখানেই জঙ্গি শিক্ষা দেওয়া হত বলে অভিযোগ। কিন্তু এই নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যেরা পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য পুরো প্রচারই ফেসবুকে সীমাবদ্ধ রেখেছিল।

লালবাজারের খবর, ধৃত মহম্মদ জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন, মামুনুর রশিদ, মহম্মদ শাহিন আলম ওরফে আলামিন বাংলাদেশের বাসিন্দা এবং রবিউল ইসলামের বাড়ি বীরভূমের নয়াগ্রামে। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ধৃতদের প্রত্যেকেরই ফেসবুকে পাঁচ-ছ’টি করে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেগুলি থেকেই নতুন নতুন যুবকের মগজ ধোলাই করা হত। এর জন্য ফেসবুকে কয়েকটি গ্রুপও তৈরি করা হয়েছিল। সেখান থেকে বেশ কয়েক জনের নাম পাওয়া গিয়েছে। মতাদর্শের দিক থেকে তাদের ঘনিষ্ঠতা ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে।

Advertisement

এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, মামুনুর, মহসিন ও শাহিন জেএমবি চাঁই হাতকাটা নাসিরুল্লার ঘনিষ্ঠ। ২০১৭ সালের শেষে নাসিরুল্লা বাংলাদেশে ধরা পড়ার পরে ওই তিন জন চাপাই নবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢোকে এবং উলুবেড়িয়ায় আশ্রয় নেয়। মহসিন কেরলেও গিয়েছিল। রাজমিস্ত্রির ছদ্মবেশে দক্ষিণ ভারতেও সংগঠন ছড়িয়েছে জেএমবি জঙ্গিরা।

ধৃতদের জেরা করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, ফেসবুকেই মামুনুরদের সঙ্গে আলাপ রবিউলের। ফেসবুকে সংগঠন বাড়ানোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় সে। ভারতবিদ্বেষী প্রচারের গ্রুপ তৈরি করেছিল তারা। তাতে জনা বারো সক্রিয় সদস্যের খোঁজ মিলেছে। রবিউল বেশ কিছু যুবককে এই চক্রে যোগ দিতে প্ররোচিত করে। ফেসবুক সূত্র ধরেই মহসিন-মামুনুরদের হদিস পায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ।

এসটিএফ সূত্রের খবর, বাংলাদেশে যাতায়াতের পাশাপাশি ধৃত তিন বাংলাদেশি গত ইদের দিন বীরভূমে রবিউলের বাড়িতে গিয়েছিল। সেই বৈঠকে আরও কয়েক জন যোগ দেয়। গত ১৩ জুন বাড়ি ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে ওই তিন বাংলাদেশির কাছে চলে আসে রবিউল। গোয়েন্দাদের দাবি, মামুনুর, মহসিন ও শাহিনের সঙ্গে কাশ্মীরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল রবিউলের। তার আগেই ধরা পড়ে যায় তারা। বাকিদের হদিস পেতে গোয়েন্দারা মঙ্গলবার রাতে কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালান। এ রাজ্যে মামুনুরদের কে আশ্রয় দিয়েছিল এবং ভুয়ো নথি দিয়ে সিম কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করেছিল, সেই বিষয়েও খোঁজখবর চলছে বলে জানান গোয়েন্দারা।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন