ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত-রায়, ভোট কি অবৈধ? প্রশ্ন আদালতের

আজ রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে মিনতি জানানো হয়েছিল, শনিবারই ৩ হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

শুনানি শেষ। কিন্তু রায় ঘোষণা হল না। পঞ্চায়েতের যে ২০ হাজারের বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি, সেগুলির ভাগ্য ঝুলেই রইল। সপ্তাহখানেকের মধ্যে রায় ঘোষণা হবে জানিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র স্পষ্ট করে দিলেন, ‘‘ভোট অবৈধ কি না, সেটাই আদালতের সামনে মূল প্রশ্ন।’’

Advertisement

আজ রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে মিনতি জানানো হয়েছিল, শনিবারই ৩ হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। উন্নয়নের ২২ হাজার কোটি টাকা ফেরৎ চলে যাচ্ছে। রাজ্যের আইনজীবী বিকাশ সিংহ বলেন, ‘‘গত দু’দিন বিচারপতিরা না থাকায় শুনানি হয়নি। আজই রায় ঘোষণার মিনতি জানাচ্ছি।’’ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র জানিয়ে দেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে রায় ঘোষণা হবে। রাজ্যের আইনজীবীরা চাপাচাপি করায় বলেন, যত দ্রুত সম্ভব রায় ঘোষণা হবে।

পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যের মোট ৩,২০৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ১,৫১৫টিতে গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু ১,৬৯২টি ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কোনও পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদের মেয়াদ ফুরোয়নি। আজ বিজেপি ফের যুক্তি দিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটপর্বে যে হিংসা হয়েছিল, তা কলকাতা হাইকোর্টই মেনে নিয়েছিল। নির্বাচন কমিশনও তাই মনোনয়ন জমার সময়সীমা বাড়ায়। বিজেপির দাবি, রাজ্যের তরফে নির্বাচন কমিশনারকে ভোর ছ’টার সময়ে হেনস্থা করে, চাপ দিয়ে সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করানো হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে বিরোধ এড়াতে তৃণমূল ‘মুচলেকা’ চাইছে

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা বলতে চাইছেন, গণতন্ত্রের মূল মন্ত্র যে বহুদলীয় ব্যবস্থা, সেটা এখানে কাজ করেনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিচার্য বিষয়, নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও পবিত্রতা। যখন কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না, তখন নির্বাচনের পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ থাকছে কি না! মনোনয়ন জমা দিতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তা হলে এই ভোট কি অবৈধ?’’ তবে বিচারপতিরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কাগজে-কলমে ছাড়া যে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায় না, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সেই যুক্তি তাঁরা মেনে নিচ্ছেন।

কিছু ভোটারের হয়ে মামলাকারী শান্তিরঞ্জন দাস যুক্তি দেন, এখানে ভোটাররাও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু রাজ্যের তরফে বিকাশ সিংহ যুক্তি দেন, মনোনয়ন জমা পড়েনি বলেই হিংসা রয়েছে, তা বলা যায় না। তৃণমূলের হয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্তি দেন, লোকসভা-বিধানসভার মতো পঞ্চায়েতে এক কেন্দ্রের ভোটার আর এক কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পারেন না। ওই পঞ্চায়েতেই প্রার্থী হতে হয়। তার মধ্যে তফসিলি জাতি-জনজাতি, মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষিত থাকে। অনেক গ্রামেই তফসিলি জনজাতির মহিলারা ভোটে প্রার্থী হতে রাজি হন না। ফলে সব দল প্রার্থী দিতে পারে না।

কল্যাণ বলেন, ‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা প্রার্থীরা শংসাপত্র পেয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কথা না শুনে কি আদালত তাঁদের নির্বাচন খারিজ করে দিতে পারে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন