হাস্যকর তত্ত্ব, বলছেন সিপিএম নেতারা
kakdwip couple

দম্পতি খুনে ধৃতেরা পুলিশি হেফাজতে

পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে আগুনে পুড়ে মারা যান দেবু দাস ও তাঁর স্ত্রী উষা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৮ ০১:২৯
Share:

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। নিজস্ব চিত্র।

কাকদ্বীপের বুধাখালিতে দম্পতি খুনের ঘটনায় ধৃত ৯ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থককে মঙ্গলবার ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন কাকদ্বীপ আদালতের বিচারক। পঞ্চায়েত ভোটের আগের রাতে আগুনে পুড়ে মারা যান দেবু দাস ও তাঁর স্ত্রী উষা।

Advertisement

এ দিকে, তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে ক্ষুব্ধ নিহতের আত্মীয়েরা। দেবুরা সিপিএম সমর্থক বলেই পরিচিত ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুতে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ সিপিএম নেতৃত্বও। তাঁদের দাবি, মূল অপরাধীদের না ধরে নিরাপরাধদের ফাঁসানো হচ্ছে মিথ্যা মামলায়।

সিপিএম শুরু থেকেই দাবি তুলছে, তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই পরিকল্পিত ভাবে এই খুন করেছে। তৃণমূল নেতৃত্ব সে সময়ে দাবি করেছিলেন, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে দম্পত্তির মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনায় শাসক দলের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়। নিহত দম্পতির ছেলে দীপঙ্কর অবশ্য পুলিশের কাছে ৮ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে বাবা-মাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের তালিকায় আছেন বুধাখালি পঞ্চায়েতের ২১৩ নম্বর বুথে তৃণমূল সদস্য অমিত মণ্ডলও।

Advertisement

বুধাখালি পঞ্চায়েতটি দীর্ঘ দিন ধরে সিপিএমের হাতে ছিল। পরে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। সিপিএমের বহু কর্মী-সমর্থক শাসক দলে ভিড়ে যায়। পঞ্চায়েত প্রধান বাবলু প্রধানের দাবি, ২১৩ নম্বর বুথে নিজেদের জয় ধরে রাখতে সিপিএমের কিছু লোকই ষড়যন্ত্র করে পুড়িয়ে মেরেছিল দাস দম্পতিকে। রাজনৈতিক ফয়দা তুলতেই এই খুন, দাবি বাবলুর।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্থানীয় সিপিএমের বক্তব্য, নোংরা রাজনীতি করছে তৃণমূল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরেই খুন করা হয়েছিল দাস দম্পতিকে। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল কখনও বলছে যা ঘটেছে, নেহাতই শর্টসার্কিট থেকে হওয়া দুর্ঘটনা। কখনও আবার বলা হচ্ছে, গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি।

মামলার সরকারি আইনজীবী দেবাশিস দাস এ দিন আবার বলেন, ‘‘সিপিএমের ছেলেরা দাস দম্পত্তির বাড়ির বাইরে ক্যাম্প করে বসে মদ খাচ্ছিল। তার প্রতিবাদ করায় ওই ছেলেরাই মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, যে ক’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সকলেই গরিব মৎস্যজীবী। নদীতে মিন ধরলে তবে হাঁড়ি চড়ে। মঙ্গলবার কাকদ্বীপ আদালতে ধৃতদের পরিবারের সদস্যেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সকলেরই দাবি, মিথ্যা অভিযোগ ফাঁসানো হয়েছে।

২১৩ নম্বর বুথের সিপিএম প্রার্থী ধৃত চন্দন পতির বৃদ্ধ বাবা সুধীর বলেন, ‘‘ঘটনার রাতে ছেলে বাড়িতে ঘুমোচ্ছিল। দেবুর ছেলে দীপঙ্কর এসে খবর দেয়। প্রতিবেশী হয়ে বিপদের সময়ে ওদের পাশে ছিলাম। সিপিএম করি বলেই ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ ধৃত সুকদেব সামুইয়ের স্ত্রী দীপালি বলেন, ‘‘সিপিএম করি বলেই আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষটাই জেলে। সংসার চালাব কী করে, কে জানে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন