পাশে থাকার বার্তায় স্টলে ঠাঁই কাশ্মীরিদের

মঙ্গলবার, মেলা শুরুর দিন ৮০ হাজার টাকার কেনাবেচা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পহেলগাঁওয়ের তিন যুবক রামিজ় আহমেদ, তারেক আহমেদ ও নাসির আহমেদ।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

পসরা: শাল দেখাচ্ছেন কাশ্মীরি যুবকেরা। পৌষমেলায়। নিজস্ব চিত্র

শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার মাঠে তৃণমূলের স্টলের পাশেই বোলপুর কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের স্টল। তার পাশেই কাশ্মীরের পহেলগাঁও থেকে আসা তিন শাল বিক্রেতার স্টল। সেই জায়গা তাঁদেরকে নিজেদের স্টল থেকে ছেড়ে দিয়েছে তৃণমূলই। তাঁরা সেখানে নিজেদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। স্টলের বাইরে লেখা, ‘দুর্গত কাশ্মীরিদের পাশে থাকুন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।’

Advertisement

মঙ্গলবার, মেলা শুরুর দিন ৮০ হাজার টাকার কেনাবেচা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পহেলগাঁওয়ের তিন যুবক রামিজ় আহমেদ, তারেক আহমেদ ও নাসির আহমেদ। জেলা তৃণমূল নেতাদের পূর্ব পরিচিত ওই তিন যুবক। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘আমি, কেষ্টদা (অনুব্রত মণ্ডল) কাশ্মীর ও বৈষ্ণোদেবী গিয়েছি। ওখানে রামিজ়, তারেক, নাসিরদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। ওই সময়টায় ওদের মতো অনেক তরুণ পর্যটকদের জন্য ঘোড়া, তাঁবু ও অন্যান্য সরঞ্জাম জুগিয়ে থাকে।’’ তিনি জানান, ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে কাশ্মীরে পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় ওই যুবকেরা সমস্যা পড়েছেন। তাই বীরভূমে শীতের পোশাক নিয়ে তাঁদের আসতে বলা হয়।

তারেকরা জানালেন, কাশ্মীর এ বছর কার্যত পর্যটক-শূন্য। প্রতি বছর শীতে প্রচুর সংখ্যায় বিদেশি আসেন। তাঁরাও আসেননি। তারেকের কথায়, ‘‘আমাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধ। সংসার চালানো সমস্যা। তাই শাল ও শীতের পোশাক নিয়ে এখানে এসেছিলাম বিক্রির আশায়। রাজনীতির কিছু জানি না। তবে, প্রথম থেকেই যে ভাবে কেষ্টদা, অভিজিৎদা পাশে দাঁড়িয়েছেন, তার তুলনা হয় না।’’

Advertisement

চলতি বছর নভেম্বরে সিউড়ি শহরের ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কর্মী সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে ওই তিন শালবিক্রেতা এসেছিলেন। সম্মেলন শেষে তাঁদের কাছে গিয়ে নিজে পছন্দ করে ছ’হাজার টাকায় একটি শাল কেনেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত। তা দেখে আরও কয়েক

জন নেতা-কর্মী সে দিন শাল কিনেছিলেন। এর পরেও তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচিতেও ওই তিন শাল বিক্রেতা হাজির থেকেছেন। এ বার তা ঘটল পৌষমেলায়। অনুব্রত বলছেন, ‘‘এখানে ব্যবসা করে ওরা যাতে কিছু আয় করতে পারে, সেটাই চেয়েছি। আমাদের দলীয় কর্মসূচিতে নাসির, রামিজ়রা যাচ্ছিল। পৌষমেলায় স্টলের একাংশ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সেই ভাবনা থেকেই।’’

বুধবারও কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের দোকানে ভিড় ছিল। বর্ধমান থেকে আসা সন্দীপ সরকার বললেন, ‘‘মেলায় ঘুরতে ঘুরতেই হঠাৎই লেখাটা চোখে পড়ল। তাই শাল কিনতে ঢুকে পড়লাম।’’ মেলার বাকি কটা দিন ক্রেতারা এ ভাবেই ভিড় জমান, চাইছেন নাসিরেরা।

(সহ প্রতিবেদন: বাসুদেব ঘোষ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন