ভস্মীভূত: সংঘর্ষের জেরে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কার্শিয়াঙের গয়াবাড়ি স্টেশন। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
পাহাড়ে আগুন, ভাঙচুর, বন্ধ চলছেই। এই সব অশান্তির যাবতীয় দায় অস্বীকার করার পাশাপাশি মুখরক্ষার পথও খুঁজে চলেছে মোর্চা এবং তার সহযোগী দলগুলি। আপাতত তাদের নজর ১৭ জুলাই রাষ্ট্রপতি ভোটের দিকে। তাদের আশা, ওই ভোট হওয়ার পরে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় ও আলোচনা আরও গতি পাবে। গতি পেতে পারে ‘ট্র্যাক টু’ রাজনীতিও। সেই আশায় আমরণ অনশনও আপাতত স্থগিত রাখল পাহাড়ি দলগুলির সমন্বয় কমিটি।
মোর্চার তরফে রোশন গিরি বলেছেন, ‘‘১৫ জুলাই থেকে আমরণ অনশন হবে না। রাষ্ট্রপতি ভোট হয়ে যাক। তার পরে কমিটি আলোচনায় বসে ঠিক করবে।’’
পাহাড়ে অশান্তি কিন্তু অব্যাহত। তার আঁচ পৌঁছেছে সমতলেও। এ দিনই পানিঘাটা বাজারের কাছে ভানুভক্তের জন্মজয়ন্তী পালন করতে গিয়েছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁকে লক্ষ করে ঢিল-পাথর ছোড়া হয়, খুকুরি নিয়ে হুমকিও দেওয়া হয়। পাহাড়ে তামাঙ্গ বোর্ডের চেয়ারম্যান সঞ্জয় মোক্তানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ দিন দার্জিলিঙের একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলর চুংচুং ভুটিয়া মোর্চায় যোগ দিয়েছেন। গৌতম দেবের অভিযোগ, প্রবল হুমকির মুখেই এমন ঘটনা ঘটছে। রোশন অবশ্য জানান, পাহাড়ের যাঁরা গোর্খ্যাল্যান্ডের পক্ষে তাঁরাই সামিল হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:মন্ত্রীকে মোর্চার ঢিল, হুমকি
এর পাশাপাশি বৃহস্পতিবার স্টেশন, বন বাংলো-সহ পাহাড়ের একাধিক সরকারি অফিস পোড়ানো হয়েছে। তিস্তা বাজারের কাছে সিকিমগামী ১৩টি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। দার্জিলিঙের পর্যটক তথ্য সহায়তা কেন্দ্রের অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ম্যাল লাগোয়া কাঠের তৈরি এই অফিসটি অতীতেও জ্বালানো হয়েছিল। সালেবঙ্গ বিট অফিস এবং লাগোয়া আবাসনগুলিও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কার্শিয়াঙের গয়াবাড়ি স্টেশনও পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। কালিম্পঙের তিস্তা বনবাংলোয় আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিস্তাবাজারে সিকিমগামী ১৩টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে যে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই, তা বোঝাতে এ দিন পাহাড়ের বিশিষ্টজনেরা রাজ্যের দেওয়া বিভিন্ন পুরস্কার ফিরিয়েও দিয়েছেন। মোর্চার নেতারা তো বটেই, অনুষ্ঠান থেকে দলের কর্মীরাও বারবার বলেছেন, তাঁদের একমাত্র দাবি গোর্খাল্যান্ড। তার পরেও তাঁরা তাকিয়ে আছেন কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনা শুরুর দিকে। আশা, একমাত্র সেখান থেকেই কোনও ইতিবাচক বার্তা আসতে পারে বিপর্যস্ত পাহাড়ে।