পরপর দু’দিন সরকারকে তুলোধনা করেছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। পাল্টা আক্রমণ করেছিল শাসক দলও। সেই রাজ্যপালই বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিলেন, ‘‘আমি খুশি। যা চেয়েছিলাম, সে ভাবেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ সরকার বা শাসক দলও নতুন করে আর রাজ্যপালকে আক্রমণ করেনি।
যদিও ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় এ দিন কেশরীর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের আগে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপালের দু’টি কাজ। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে সে ব্যাপারে সরকার কী করছে জানতে চাওয়া। এবং সরকারকে পরামর্শ দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল উচিত কাজই করেছেন।’’
কিন্তু কেশরী-মমতা সংঘাত যে স্তরে পৌঁছেছে তা ‘উচিত’ কাজ বলে মনে করছেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রাজভবন সূত্রের খবর, দু’দিনের বাদানুবাদের পর রাজনাথ কথা বলেন কেশরীর সঙ্গে। এই তিক্ততা আর না হওয়াই বাঞ্ছনীয় বলে জানান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের খবর, রাজনাথ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও। তার পরই সরকার ঠিক পথে এগোচ্ছে বলে রাজ্যপাল মন্তব্য করেন। অনেকেই মনে করছেন, রাজভবন-নবান্ন সংঘাত কমাতে রাজনাথের মধ্যস্থতাই নেপথ্যে কাজ করেছে।
আরও পড়ুন:শান্ত সকাল তপ্ত দুপুর বসিরহাটে
মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা কাটাকাটি হয় রাজ্যপালের। মমতা বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যপাল আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন। উনি অপমান করার পরে ভেবেছিলাম ছেড়ে দেব। এত অপমানিত জীবনে হইনি।’’ এর পর রাজভবন থেকে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী অপমানিত হতে পারেন, এমন কোনও কথা দু’পক্ষের মধ্যে হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকিও দেওয়া হয়নি।’’
পারস্পরিক এই বাদানুবাদের উত্তপ্ত আবহে বুধবার সকালে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালকে ‘বিজেপির ক্যাডার’ বলে আক্রমণ করেন। রাজভবনও জবাবে বলে, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ভিত্তিহীন। এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ‘ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল’ করা।’’
সুর চড়িয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপির তোতাপাখি।’’ এ দিন বলেন,‘‘এ ছাড়া ওঁর আর অন্য পথ নেই। আমরা খুশি। উনি ওঁর পদের গরিমা বজায় রাখলে আমরাও ওঁর গরিমা বজায় রাখব।’’
গরিমা বজায় রাখার প্রক্রিয়ায় আপাতত মধুরেণ সমাপয়েৎ পর্ব। রাজ্যপালের কথায়, ‘‘আমি চাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক। রাজ্যে শান্তি ফিরুক।’’