চাল পচছে স্কুলে, অভুক্ত বহু পড়ুয়া

শুধু এই দু’জনই নয়, ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার দরিদ্র পরিবারের বহু স্কুলছাত্রেরই একই অবস্থা। অনেকেরই ভরপেট খাবার জুটছে না। অথচ স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল পচছে। প্রথমে গরমের ছুটি, আর তার পর থেকে টানা অশান্ত কাঁকিনাড়া।

Advertisement

সুপ্রকাশ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০২:৪৫
Share:

পড়াশোনা: অল্প কয়েক জন ছাত্রী নিয়ে চলছে ক্লাস। বুধবার কাঁকিনাড়া উর্দু গার্লস স্কুলে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

বছর বারোর পারভিন খাতুনের বাবা দিনমজুর। পাঁচ জনের সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় তাঁকে। কাঁকিনাড়া উর্দু গার্লস হাইস্কুলের মিড-ডে মিলই তাই ষষ্ঠ শ্রেণির পারভিনের ও তার বোন পঞ্চম শ্রেণির রুবিনার ভরসা। কিন্তু গত দু’মাস ধরে সেই মিড-ডে মিলই পাচ্ছে না তারা।

Advertisement

শুধু এই দু’জনই নয়, ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ার দরিদ্র পরিবারের বহু স্কুলছাত্রেরই একই অবস্থা। অনেকেরই ভরপেট খাবার জুটছে না। অথচ স্কুলে মিড-ডে মিলের চাল পচছে। প্রথমে গরমের ছুটি, আর তার পর থেকে টানা অশান্ত কাঁকিনাড়া। গোলমাল কিছুটা শান্ত হতে সোমবার থেকে স্কুল খুলেছে। কিন্তু স্কুলে পড়ুয়া তেমন আসছে না। অভিভাবকেরা ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন।

কাঁকিনাড়া উর্দু গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক শামিমা খাতুন জানান, তাঁদের স্কুলে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা হাজার দেড়েক। গরমের ছুটির জন্য প্রায় দেড় মাস স্কুল বন্ধ ছিল। সে জন্য মিড-ডে-মিলের খাবার পায়নি পড়ুয়ারা। এর পর ভোটের সময় থেকেই এলাকা তেতে ওঠে। ১০ জুন স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম। ১৭ তারিখ গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর পর থেকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়। ফের বন্ধ হয়ে যায় স্কুল।

Advertisement

শামিমা বলেন, ‘‘সোমবার স্কুল খুললেও মাত্র ৬০ জন পড়ুয়া এসেছিল। বুধবার সব মিলিয়ে সাড়ে তিনশো ছাত্রী স্কুলে এসেছিল। এখনও বহু ছাত্রী স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা যদি উদ্যোগী হন, অভিভাবকদের সাহস দেন, তা হলে হয়তো পড়ুয়ার উপস্থিতি বাড়বে।’’

কাঁকিনাড়া হিমায়াতুল হাইস্কুলের ছবিটা একটু অন্য রকম। সেখানে পড়ুয়ারা এলেও তাদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। কারণ পুরো স্কুলবাড়ি রয়েছে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর দখলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন বলেন, ‘‘ভোটের সময় থেকেই এলাকা অশান্ত। গরমের ছুটির পরে যখন স্কুল খোলে, তখনই স্কুলের কয়েকটি ঘরে পুলিশ ছিল। গোলমাল বাড়ার পরে পুরো স্কুলই পুলিশের দখলে চলে গিয়েছে।’’

পুলিশকর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, গত চার দিন কাঁকিনাড়ায় বড় ধরনের কোনও অশান্তি হয়নি। মঙ্গলবার রাতে কাঁকিনাড়ার মানিকপির এলাকায় একটি বাড়ি লক্ষ্য করে চারটি বোমা ছোড়া হয়। তবে বুধবার এলাকা শান্তই ছিল। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে স্কুল থেকে বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হবে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন