২৩ জানুয়ারি নেতাজির বদলে স্বামীজির জন্মদিন পালন করল কোলাঘাটের পঞ্চায়েত

মনীষীর জন্মদিন বলে কথা। সকাল সকালই আয়োজন সারা। পতাকা তোলা হল, গাওয়া হল জাতীয় সঙ্গীত, মনীষীর ছবিতে মালা দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান নিয়ে অতিথিরা দু’-চার কথা বললেনও।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২২
Share:

বিবেকানন্দের ছবিতে মালা। নিজস্ব চিত্র

মনীষীর জন্মদিন বলে কথা। সকাল সকালই আয়োজন সারা। পতাকা তোলা হল, গাওয়া হল জাতীয় সঙ্গীত, মনীষীর ছবিতে মালা দিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান নিয়ে অতিথিরা দু’-চার কথা বললেনও।

Advertisement

অনুষ্ঠান শেষ। তবে মালা দেওয়া ছবিটা আর সরানো হয়নি। বেলার দিকে তাতে নজর পড়তেই চোখ কপালে উঠল খন্যাডিহির ছেলে-বুড়োদের। ভিড় জমল। জটলায় গুঞ্জন— এ তো ঐতিহাসিক ভুল!

২৩ জানুয়ারি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে বড়সড় ‘ভুল’ই করে ফেলেছে কোলাঘাট ব্লকের খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েত। বুধবার নেতাজির ১২৩তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মালা দেওয়া হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের ছবিতে। চেয়ারে সেই ছবি রেখেই আগাগোড়া অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে ‘ভুল’ ভাঙেনি কারও।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রাথমিকে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, জোর ধাক্কা রাজ্য সরকারের

শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত অফিসের সামনে প্রধান সুপ্রিয়া পাঁজা যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তা-ও উল্টো ভাবে লাগানো ছিল বলে অভিযোগ। উপরে ছিল সবুজ ও নীচে গেরুয়া! প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত কর্মীদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে হাজির ছিল কচিকাঁচারাও। তাদের সামনেই উল্টো করে জাতীয় পতাকা টাঙিয়ে বিবেকানন্দের ছবিতে মালা দিয়ে নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। ১২ জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্মদিনে অবশ্য এই পঞ্চায়েতে কোনও অনুষ্ঠান হয়নি।

আরও পড়ুন: এ বার কীর্তনে মন কৈলাসের

তৃণমূল সরকারের আমলে মনীষীদের জন্মদিন, মৃত্যুদিন পালনের ব্যাপ্তি বেড়েছে। খাস নবান্নেও বিশেষ এই দিনগুলি পালিত হয়। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের এমন কাণ্ড সামনে আসায় শোরগোল পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে পথচলতি একজনের নজরে পড়ে ছবির গরমিলের বিষয়টা। তিনি খবর দেন পঞ্চায়েত অফিসের এক কর্মীকে। তিনি এসে তড়িঘড়ি ছবি বদলে সুভাষচন্দ্রের প্রতিকৃতি রাখেন। জাতীয় পতাকাও সোজা ভাবে টাঙানো হয়। ততক্ষণে অবশ্য পঞ্চায়েতের ‘ভুল’ গোটা এলাকা জেনে গিয়েছে। পাঁশকুড়ার জাতীয় শিক্ষক নির্মলচন্দ্র মাইতির মতে, ‘‘শিশুদের সামনে এই ধরনের ভুল একেবারেই কাম্য নয়। এতে তো কে নেতাজি, সেটাই শিশুরা ভুল শিখবে।’’

বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরাও। কোলাঘাটের সিপিএম বিধায়ক ইব্রাহিম আলির কথায়, ‘‘তৃণমূল আমলে শিক্ষা-সংস্কৃতির অবনমন কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, এতেই বোঝা যায়।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের আবার কটাক্ষ, ‘‘যে দল নেতাজি, মহাত্মা, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি টাঙায়, তাদের কাছে এমন ভুলই তো প্রত্যাশিত।’’

ভুল অবশ্য মেনে নিয়েছেন খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুপ্রিয়া পাঁজা। তিনি বলেন, ‘‘গোটা ঘটনার জন্য আমি খুবই দুঃখিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন