প্রতীকী ছবি।
বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলিতে যে ইংরেজি চর্চায় খামতি থেকে যাচ্ছে, সেটা মানছে শিক্ষা শিবিরও। তাই সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অভিভাবকদের একটা বড় অংশ বাংলা মাধ্যমের স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে মনে করছেন শিক্ষা জগতের অনেকেই।
তারই মধ্যে সদিচ্ছা আর সক্রিয়তার জোরে খাস কলকাতাতেই জনপ্রিয়তা টিকিয়ে রাখতে পেরেছে বেশ কয়েকটি বাংলা মাধ্যমের স্কুল। যেমন, যাদবপুর বিদ্যাপীঠে ১৫০০, হিন্দু স্কুলে ১৩০০, গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১২০০-র বেশি। ওই সব স্কুলের কর্তৃপক্ষ পড়ুয়ার সংখ্যায় ভাটা পড়তে দেননি।
আন্তরিকতা আর বিশেষ কিছু পন্থা অবলম্বন করেই এটা সম্ভব করে তুলছে কিছু স্কুল। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুধু পঠনপাঠনের মান উন্নয়ন করলেই হবে না। সেটাকে মনোগ্রাহী করে তুলতে হবে। তা হলে অবশ্যই স্কুলের উপরে ভরসা বাড়বে।’’ গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘শুধু ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবলে হবে না। যে-সব এলাকায় অনেকে লিখতে-পড়তে পারেন না, সেখানে আমরা অভিভাবকদেরও লেখাপড়া, ইংরেজি শেখাচ্ছি।’’ পড়ুয়ার পাশে স্কুলকে থাকতে হবে। তা হলেই পড়ুয়া টেনে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁরা।
সম্প্রতি কলকাতায় সরকারি স্কুল শিক্ষক সংগঠনের এক অনুষ্ঠানে বাংলা স্কুলগুলির বেহাল দশার কথা তুলে ধরেন হিন্দু, হেয়ারের মতো প্রাচীন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষকেরা। তাঁরা বলেন, বাংলা স্কুলেও ইংরেজির চর্চা বাড়াতে হবে। উন্নতি ঘটাতে হবে পঠনপাঠনের মানের। এর অভাবেই যে বিপর্যয়, সেই বিষয়ে একমত হয়েছিলেন ওই প্রাক্তন শিক্ষকেরা।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘ইংরেজির রমরমা তো আছেই। পরিকাঠামোর অভাব এবং সরকারের উদাসীনতার ফলে বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’
ময়দান ছাড়তে না-চাওয়া বাংলা স্কুলগুলি দেখিয়ে দিচ্ছে, উদাসীনতার জায়গায় আন্তরিকতা দিয়ে এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব।