মশার ভয়ে জমি সাফাইয়ে পুর ভবনের দ্বারস্থ বরো

গোরক্ষবাসী মন্দির সংলগ্ন প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপরে বাগুইআটি থানা, একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, তিনটি জলাশয় রয়েছে। পুর নিগমের আধিকারিকদের একাংশ জানান, ওই এলাকার বহু জায়গা জঙ্গলে ভর্তি।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০০
Share:

বাগুইআটির আট নম্বর ওয়ার্ডের ৩০ বিঘা জমিতে মশার আতঙ্ক!

Advertisement

বিধাননগর পুর নিগম সূত্রের খবর, জরুরি ভিত্তিতে ওই জমি সাফাইয়ের জন্য পুর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিতে চলেছেন দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মণীশ মুখোপাধ্যায়।

গোরক্ষবাসী মন্দির সংলগ্ন প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপরে বাগুইআটি থানা, একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, তিনটি জলাশয় রয়েছে। পুর নিগমের আধিকারিকদের একাংশ জানান, ওই এলাকার বহু জায়গা জঙ্গলে ভর্তি। সেখানে মশার পাশাপাশি সাপ ও বিষাক্ত কীটপতঙ্গের বাস। গত বছর ওই ওয়ার্ডে বহু মানুষ ডেঙ্গি সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছিল। অবিলম্বে সাফাই শুরু না হলে এ বছর ডেঙ্গি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে বলে বরো কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। বরো তার ক্ষমতানুযায়ী সাফাই শুরু করলেও তাদের পরিকাঠামো দিয়ে ওই বিশাল জমি সাফাই সম্ভব নয়। তাই পুর ভবনকে অবহিত করার কথা ভাবা হয়েছে। এক পুর কর্তা জানান, ওই জমিতে যে ভাবে ঝোপ-জঙ্গল তৈরি হয়েছে তাতে জল জমে ডেঙ্গির জীবাণু বহনকারী এডিস মশার লার্ভা জন্মানোর উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বর্ষার আগে দ্রুত পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে
যেতে পারে বলে মনে করছে বরো।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, সম্প্রতি ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে গঠিত পুরসভার বিশেষ দল বাগুইআটি থানায় যায়। পরিস্থিতি দেখে পুর কর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর। থানা চত্বরে প্রচুর বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি, বাইক রয়েছে। সেগুলিতে জল জমে মশার বংশবৃদ্ধি হতে পারে। এক পুরকর্মীর কথায়, ‘‘থানার মেসের পিছনের দিকে সার দিয়ে বাইক রয়েছে। তাতে ব্লিচিং ছড়ানো! পড়ে থাকা ফাঁকা বোতলেও ব্লিচিং ছড়ানো। কিন্তু ব্লিচিং ব্যবহারে তো মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়! নর্দমার মধ্যে মশার লার্ভা জন্মেছে। পাতকুয়োর মুখ খোলা। ওই স্বচ্ছ জলে এডিসের লার্ভা জন্মাতে সময় লাগবে না।’’ পুকুরগুলিতে জঞ্জাল, থার্মোকল, প্লাস্টিক ফেলা হয়েছে। তার উপরে জল জমলে কী হবে, তা ভেবে আতঙ্কিত পুরকর্মীরা। পুরসভার ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘এক বছর পরেও এডিস মশার ডিম ফুটে লার্ভা জন্মাতে পারে। তাই আরও সতর্ক হওয়া উচিত।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, অবিলম্বে ওই জমি সাফাইয়ের জন্য অতিরিক্ত সাফাইকর্মী চেয়ে পাঠিয়েছেন বরো কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি জলাশয় পরিষ্কার করে মাছ চাষ শুরুর আর্জিও জানানো হয়েছে। দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মণীশবাবু বলেন, ‘‘ওই জমি যে ভাবে পরিষ্কার হওয়ার কথা তা হয় না। গত বছরের পরিস্থিতি যাতে না হয় সে জন্য আমরা সক্রিয়।’’ মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘বরোর চিঠি পেয়েছি। ওই জমি কী ভাবে পরিষ্কার করা যায় তা আমরা দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন