কিছু দিন আগেই বেআইনি বিদ্যুৎ হুকিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে মৃত্যু হয় মেটিয়াবুরুজের যুবক নজরুল ইসলামের। তার রেশ না মিটতেই ফের মদ্যপান ও অশ্লীলতার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আরও দু’জন মার খেলেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার, খিদিরপুরের এক আবাসনের ঘটনা। তবে ঘটনায় দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’তরফের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই ছাদে, পার্কিং লটে মদ্যপান করত ওই আবাসনেরই বাসিন্দা এক দল যুবক। আপত্তি করলে শুনতে হত শাসানি, হুমকি, অশ্লীল কথা। মঙ্গলবার এরই প্রতিবাদ করতে গিয়ে মহম্মদ তৌহিদ (৩৪) নামে এক যুবক তাদের হাতে প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। আহত হন তাঁর দাদা মহম্মদ সফিকও। বুধবার পুলিশের কাছে এই অভিযোগ জানান তাঁরা। ওয়াসিম, জাভেদ, কপিল, টিঙ্কু, সামিম ও জামিল নামে ছয় যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
তৌহিদের মাসতুতো দাদা শেখ সাজিদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত বারোটা নাগাদ একটি নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে সপরিবার ফেরেন মহম্মদ তৌহিদ। পার্কিং লটে তখন মদ্যপান করছিল অভিযুক্তেরা। প্রথমে দরজা খুলতে বলায় তারা চেঁচামেচি করে, গালাগালি দেয়। তৌহিদ জোর করে দরজা খোলায় গাড়ি পার্ক করার সময়ে অভিযুক্তেরা চড়াও হয় তাঁদের উপরে। অভিযোগ, তৌহিদের স্ত্রীয়ের গায়েও হাত তোলে অভিযুক্তেরা। তৌহিদের দাদা নেমে এসে ভাইকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে অভিযুক্তদের লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে যায় তাঁর।
খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। তাতেও মারামারি না থামলে থানা থেকে আরও বাহিনী আনা হয়। দু’পক্ষের আহতদের প্রথমে পিজিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে দশটি সেলাই করতে হয় সফিকের মাথায়। প্রাথমিক চিকিৎসা হয় তৌহিদ ও তাঁর স্ত্রীর।
তৌহিদের পরিবারের অভিযোগ, বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এফআইআর করতে থানায় গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে, উল্টে বলে, ওই যুবকরাও আহত হয়েছে। তাই অভিযোগ নেওয়া হবে না। দুপুরে আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতের ঘটনার পরে দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত চলছে। তৌহিদের পরিবারের দাবি, আগেও বহু বার অভিযুক্তদের মাতলামির প্রতিবাদ করেছিলেন তৌহিদ। যে ছ’জনের বিরুদ্ধে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, তারা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং তৌহিদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে, মেরে ফেলার ভয়ও দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।