Sexual Harassment

সাহায্যের নামে ‘গণধর্ষণ’, কলকাতায় ধৃত দুই বিদেশি ফুটবলার এবং এক তরুণী

পাঁচ দিন আগের এই ঘটনায় শনিবার রাতে তিলজলা ও নিউ টাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলা-সহ তিন অভিযুক্তকে। ওই তরুণী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গত ১৯ মে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৩ ০৬:৩৬
Share:

অভিযোগ, দুই বিদেশি ফুটবলার নিজেদের ফ্ল্যাটে টাকা দেওয়ার অছিলায় ধর্ষণ করেন এক তরুণীকে। প্রতীকী ছবি।

পাড়ার পরিচিত তরুণীর কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলেন মেয়েটি। সাহায্যপ্রার্থীকে ওই তরুণী জানান, তাঁর কাছে টাকা নেই। কিন্তু তাঁর সঙ্গে গেলে তিনি টাকার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। সেই বিশ্বাসে তাঁর সঙ্গে সাহায্যপ্রার্থী তরুণী গিয়েছিলেন দুই বিদেশি ফুটবলারের কাছে। অভিযোগ, তাঁরা নিজেদের ফ্ল্যাটে টাকা দেওয়ার অছিলায় ধর্ষণ করেন ওই তরুণীকে।

Advertisement

পাঁচ দিন আগের এই ঘটনায় শনিবার রাতে তিলজলা ও নিউ টাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলা-সহ তিন অভিযুক্তকে। নিউ টাউন থানা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গত ১৯ মে। তার ভিত্তিতে এই ধরপাকড় চালায় পুলিশ। লিজ়া নামে যে মহিলা সাহায্যপ্রার্থী ওই তরুণীকে দুই ফুটবলারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তিনিও। রবিবার তিন জনকেই বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ধৃত দুই ফুটবলারের নাম ক্রিস জোসেফ ও মোজেস জুটা। তাঁরা ঘানার বাসিন্দা। কলকাতার তিলজলায় একটি ফ্ল্যাটে তাঁরা থাকেন। এই শহরের বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা চুক্তির বিনিময়ে খেলেন।

Advertisement

ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, ঘানার ওই দুই ফুটবলার চুক্তির বিনিময়ে খেলে থাকেন। তবে কলকাতার কোনও নামী ক্লাবের সঙ্গে তাঁদের এখনও কোনও যোগসূত্র পাওয়া যায়নি বলেই দাবি করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, দুই ফুটবলার ২০১৯ সালে কলকাতায় এসেছিলেন। কোভিডের সময়ে তাঁরা ঘানায় ফিরে যান। ফের ২০২১ সালে তাঁরা কলকাতায় আসেন।

ময়দান সূত্রের খবর, দক্ষিণ শহরতলিতে এই ধরনের বিদেশি ফুটবলারদের বসবাস রয়েছে। তাঁদের বেশির ভাগই নামী ক্লাবের সঙ্গে জড়িত নন। মূলত, লেখাপড়া করতে তাঁরা এ দেশে আসেন। এখানে বসবাসের খরচ তুলতে বিভিন্ন ফুটবল প্রতিযোগিতায় খেলেন। অতীতেও এই ধরনের ‘খেপ’ খেলা ফুটবলারদের নানা অপরাধমূলক ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। বিশেষত, মাদক পাচার বা সরবরাহ সংক্রান্ত অপরাধে একাধিক বার নাইজিরিয়া কিংবা ঘানার ফুটবলারদের নাম জড়িয়েছে। কখনও কলকাতা পুলিশ, কখনও নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর হাতে ধরা পড়েছেন তাঁরা।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, নিউ টাউন থানা এলাকার বাসিন্দা ওই অভিযোগকারিণী একাই থাকেন। পরিবারের সঙ্গে তাঁর বনিবনা নেই। বাড়ি ভাড়া দিতে না পেরে তিনি লিজ়ার কাছে সাহায্য চান। মিজোরামের বাসিন্দা লিজ়ার সঙ্গে ওই ফুটবলারদের আগেথেকেই পরিচয় ছিল।

লিজ়ার প্রসঙ্গে পুলিশের দাবি, ওই তরুণী নানা ধরনের কাজ করে থাকেন। অনেক বিদেশির সঙ্গেই তাঁর বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই সুবাদে তিনি ক্রিস এবং মোজেসের সঙ্গেও পরিচিত। এ ছাড়া লিজ়ার কাজকর্ম নিয়েও সন্দেহ রয়েছে পুলিশের। অভিযোগকারী তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, দুই ফুটবলার তাঁর উপরে অত্যাচার করার সময়ে লিজা তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করেননি। ফলে, ধর্ষণের ঘটনায় লিজ়ার প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় রয়েছে ধরে নিয়েই পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন