চলছে স্কাইওয়াক তৈরির কাজ। ৩১ মার্চের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা। দক্ষিণেশ্বরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে কাজ। প্রয়োজনে আরও বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করতে হবে। দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের নির্মাণকারী সংস্থাকে কড়া ভাষায় এমনই নির্দেশ দিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
রবিবার কামারহাটি পুরসভার একটি অনুষ্ঠানে এসে স্কাইওয়াকের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন ফিরহাদ। সব কিছু দেখে তিনি স্কাইওয়াক নির্মাণকারী সংস্থার কর্তাদের ডেকে সাফ জানিয়ে দেন, আর কোনও ভাবেই বেশি সময় দেওয়া যাবে না। ৩১ মার্চের মধ্যে কাজ শেষ করে রাজ্য সরকারকে হস্তান্তর করতে হবে। এ দিন স্কাইওয়াকের নীচে রানি রাসমণি রোড হেঁটে দেখেন মন্ত্রী। রাস্তা ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট করা, বড় নিকাশি নালা তৈরির বিষয়েও তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার সঙ্গে আলোচনা করেন।
পরে মন্ত্রী স্কাইওয়াকের উপরে ওঠেন। সেখানে গম্বুজাকৃতি যে কাঠামো লাগানো হয়েছে, সেগুলি দেখার পাশাপাশি পলিকার্বন ফাইবার গ্লাস লাগানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ফিরহাদ বলেন, ‘‘প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। এ বার দিনরাত এক করে কাজ শেষ করতে হবে। আশা করি, এপ্রিলে স্কাইওয়াক উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।’’ তবে নির্মাণকারী সংস্থা এই সময়সীমা না মানলে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
২০১৬ সালে শুরু হয়েছিল স্কাইওয়াকের কাজ। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক বার প্রকল্প শেষের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা হয়েছিল। ভূগর্ভস্থ পরিষেবা লাইন সরাতে হয়েছে। মাটির নীচ থেকে জল উঠছিল, তার সঙ্গে বর্ষাও যথেষ্ট সমস্যা করেছে। এ ছাড়া, পোস্তার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর থেকেই যে কোনও সেতু বা উড়ালপুল তৈরিতে নজরদারি, নিরাপত্তা, সুরক্ষা খতিয়ে দেখার উপরে বিশেষ জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাই, দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক তৈরিতে ব্যবহৃত সমস্ত লোহা ও ইস্পাতের পাত পরীক্ষা করে রাইট্স ছাড়পত্র দেওয়ার পরেই তা দিয়ে কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
ফিরহাদ এ দিন বলেন, ‘‘এখন তিন মাস শুকনো মরসুম। তাই আর কোনও বাধা আসার সম্ভবনা নেই।
সে জন্যই এপ্রিলে উদ্বোধনের লক্ষ্যমাত্রা রাখছি।’’ তিনি আরও জানান, রাজ্যের সব পুরসভাকে ইতিমধ্যেই মাটির তলা দিয়ে সব কেব্ল নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কামারহাটি পুরসভাকেও আবার বলা হয়েছে, স্কাইওয়াকের পাশে যেন কোনও তারের জঙ্গল না থাকে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজের সঙ্গে স্কাইওয়াকটি কয়েক দিনের মধ্যেই জুড়ে দেওয়া হবে। তার পরে শুরু হবে এসক্যালেটর ও সিঁড়ি তৈরির কাজ। এ দিন পুরমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কামারহাটির চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী আর কোনও দেরি শুনতে চান না বলে জানিয়েছেন। এ বার নির্মাণকারী সংস্থা নিশ্চয় কাজটি শেষ করবে।’’