—প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে লেনদেন করতে সমস্যা হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ফেসবুক পেজে অভিযোগ জানিয়েছিলেন রেলের এক পদস্থ কর্তা। সেখান থেকেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্রতারকেরা রেলকর্তার থেকে ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। পরে বিষয়টি টের পেয়ে পশ্চিম বন্দর থানায় অভিযোগ জানান তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ চার জনকে পাকড়াও করেছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মহম্মদ আফজল, বিকাশ দাস, কিরণ দাস এবং অভিষেক সিংহ। তারা ঝাড়খণ্ডের জামতাড়ার বাসিন্দা।
লালবাজার সূত্রে খবর, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি জগতে জামতাড়া পরিচিত নাম। সারা দেশে যত ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা ঘটে, তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই জেলার যুবকদের যোগ থাকার প্রমাণ মিলেছে। পুলিশের খাতায় এরা জামতাড়া গ্যাং নামেই প্রসিদ্ধ।
কী ভাবে রেলকর্তাকে ফাঁদে ফেলেছিল প্রতারকেরা? পুলিশ সূত্রের খবর, জুলাই মাসে ওই রেলকর্তা ব্যাঙ্কের ফেসবুক পেজে নিজের বিশদ বিবরণ দিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ব্যাঙ্ককর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং কথার ফাঁদে ফেলে তাঁর থেকে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। তদন্তকারীদের একাংশ জানান, ওই ৪০ হাজার টাকা হাতিয়েই থামেনি প্রতারকেরা। ওই ব্যাঙ্ককর্তাকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে আরও ২৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। টাকা লোপাট হয়েছে বুঝতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই রেলকর্তা।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে আধিকারিকেরা দেখেন, একটি অনলাইন ওয়ালেটের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়েছে এবং সেই টাকা দিয়ে বারাণসীর একটি দোকান থেকে মোবাইল কেনা হয়েছে। এ বার সেই ওয়ালেট এবং বারাণসীর দোকানের সূত্র ধরে পঞ্জাব, দিল্লি, হরিয়ানা-সহ একাধিক রাজ্যে তল্লাশি চলে। শেষমেশ জামতাড়া থেকেই পাকড়াও করা হয় ওই চার জনকে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, এই চক্রের মূল চাঁই আফজল। কিরণ ও বিকাশ ‘শিকার’-কে ফোন করত। শিকারের কাছ থেকে লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ওটিপি’ যেত অভিষেকের মোবাইলে। সেই ওটিপি ব্যবহার করেই টাকা হাতিয়ে নিত সে। সেই টাকা দিয়ে মোবাইল কিনত আফজল। সেই মোবাইল বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিত প্রতারকেরা।