১৭৩ কোটি তছরুপ, ধৃত জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের ৪ কর্তা

ভুয়ো সংস্থা খুলে জালিয়াতি এবং সরকারি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের চার কর্তাকে। অভিযোগ, এই প্রতারণার ফলে নিগমের ১৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৬
Share:

ভুয়ো সংস্থা খুলে জালিয়াতি এবং সরকারি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের চার কর্তাকে। অভিযোগ, এই প্রতারণার ফলে নিগমের ১৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে আলিপুর থেকে ওই চার কর্তাকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ধৃতদের আজ, মঙ্গলবার, বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগম ক্ষুদ্র-কুটির এবং মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণ দেয়। ওই ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নাম করেই ধৃতেরা নিগমের সঙ্গে প্রতারণা এবং জালিয়াতি করেছে বলে অভিযোগ সিআইডি-র।

সিআইডি জানায়, ধৃতেরা হলেন সংস্থার পূর্বাঞ্চলের জোনাল ম্যানেজার মানিকলাল দাস, অ্যাকাউন্টস অফিসার প্রদীপ কর্মকার, ওড়িশার বালেশ্বরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গোপীনাথ ভট্টাচার্য ও এগজিকিউটিভ ম্যানেজার জয়ন্ত দাস। গোপীনাথ ও জয়ন্ত আগে সংস্থার কলকাতা অফিসের দায়িত্বে ছিলেন।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, গত ২৬ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকারি ওই সংস্থার তরফে বিধাননগর উত্তর থানায় একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়। তাতে বলা হয়, ২০১২-’১৩ সাল থেকে গত কয়েক বছর ভুয়ো সংস্থাকে ঋণ দেওয়ার ফলে নিগমের প্রায় ১৭৩ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। ভবানী ভবন সূত্রের খবর, গত অক্টোবরে গড়িয়া থেকে গ্রেফতার হন নিগম থেকে ঋণ নেওয়া একটি ভুয়ো সংস্থার কর্তা। ধৃত দেবব্রত হালদার নামে ওই অভিযুক্ত বর্তমানে জেল হেফাজতে। কিন্তু তাঁকে জেরা করতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ সিআইডি-র তদন্তকারীদের।

সিআইডি সূত্রের খবর, সোমবার গ্রেফতার হওয়া জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের চার কর্তাই সেই সময়ে সল্টলেক অফিসের দায়িত্বে ছিলেন। নিগম যে ঋণ দেয়, তা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ওই চার কর্তার উপরে। ওই সংস্থাগুলির বাস্তবে অস্তিত্ব নেই। দেবব্রত হালদারকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই দায়িত্বের সুযোগ নিয়ে ঋণ জোগাড় করে দেওয়ার জন্য প্রায় ৬৩টি সংস্থা খোলে জালিয়াতেরা। যাদের সাহায্য করেন নিগমের বেশ কয়েক জন কর্তা। গোয়েন্দাদের দাবি, যাঁর মধ্যে রয়েছেন এ দিন ধৃত নিগমের চার কর্তা।

সিআইডি-র দাবি, ভুয়ো সংস্থা খোলার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাঙ্কে ওই সব সংস্থার অ্যাকাউন্ট খোলা হয় ভুয়ো নথি দেখিয়ে, যা করতে সাহায্য করেন নিগমের ওই ধৃত কর্তারা। এমনকী, যে সব সংস্থা ঋণের জন্য আবেদন করছে, তাদের সম্পর্কিত নথি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব নিগমের অভিযুক্তদের হাতে থাকলেও তাঁরা তা করেননি।

তদন্তকারীরা জানান, নিগমের কয়েক জন কর্তা বেনামে ওই ভুয়ো সংস্থাগুলির মালিক। অন্য ব্যাক্তিকে সংস্থার কর্তা সাজিয়ে ভুয়ো অফিস দেখিয়ে তাঁরা ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন