Walkie-talkie

ওয়াকিটকিতে কথা বলেই ডাকাতির ছক!

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে ধৃতদের জেরা করে ওই ডাকাত-চক্রের হদিস পাওয়া যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ০৮:০৩
Share:

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র এবং ওয়াকিটকি। নিজস্ব চিত্র

একেবারে সংগঠিত ব্যাঙ্ক-ডাকাতি চক্র!

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে বিষ্ণুপুর থানা এলাকার আমতলার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক লুটের চেষ্টার অভিযোগে দুষ্কৃতী দলের মূল পান্ডা-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করার পরে এমনই দাবি করছে পুলিশ। ব্যাঙ্কের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্র ধরে ওই সন্ধ্যায় দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে ধৃতদের জেরা করে ওই ডাকাত-চক্রের হদিস পাওয়া যায়। মঙ্গলবার রাতে বারুইপুর জেলা পুলিশের বাসন্তী থানার সোনাখালি এলাকা থেকে কুতুব শেখ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। কুতুব ওই ডাকাত-চক্রের পান্ডা বলে দাবি পুলিশের।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, বাসন্তী থানা এলাকায় চারটি অফিস খুলে সংগঠিত ভাবে ব্যাঙ্ক ডাকাতির ছক কষত কুতুব। পুলিশের চোখে ফাঁকি দেওয়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মোবাইল ফোন ব্যবহার না করে ওয়াকিটকির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে কথা বলত দুষ্কৃতীরা, এমনটাই দাবি ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চারটি অফিসে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তিনটি ৯ এমএম পিস্তল, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও ছ’টি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘ল্যাপটপগুলি পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সেগুলিতে জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্কের নাম ও ঠিকানা রয়েছে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় যেখানে যেখানে ব্যাঙ্ক রয়েছে, সেই
সব এলাকার মানচিত্রও ল্যাপটপে পাওয়া গিয়েছে।

তদন্তকারীদের দাবি, শুধু ডাকাতি নয়। ওই সব অফিসের মাধ্যমে কী ভাবে ডাকাতি করতে হবে, তার প্রশিক্ষণও দেওয়া হত। যে ব্যাঙ্কে ডাকাতি করা হবে, সেটি নির্দিষ্ট করার পরে কয়েক জন দুষ্কৃতীকে বাছাই করে তাদের হাতে মোবাইল ফোন ও ওয়াকিটকি তুলে দেওয়া হত। ডাকাতি করে বেরিয়ে আসার পরে মোবাইল ফোন চালু করত দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ডাকাতি করার সময়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের মূল মাধ্যম ছিল ওয়াকিটকি।

ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের কর্তাদের দাবি, মাসখানেক আগে বিষ্ণুপুর থানার নেপালগঞ্জ এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীর দল। ওই ডাকাতির ঘটনায় ধৃতেরা জড়িত রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। বছরখানেক আগে বারুইপুর থানার চম্পাহাটিতে দিনের বেলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কয়েক লক্ষ টাকা ও গয়না লুট করে মোটরবাইক চেপে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীদের দল। তার কিনারা আজও হয়নি। ওই ব্যাঙ্ক লুটের ঘটনায় এই দুষ্কৃতীর দল জড়িত রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে।

ধৃতদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ওই সব ব্যাঙ্ক লুটের বিষয়ে জেরা করা হবে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের সুপার বলেন, ‘‘শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নয়। আশপাশের জেলাতেও ওই দুষ্কৃতীরা ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে একাধিক ব্যাঙ্ক লুট ও ডাকাতির ঘটনার কিনারা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন