ট্যাংরা

ক্লাব থেকে মিলল তাজা বোমা

ক্লাব চত্বরের ভিতর থেকে পাওয়া গেল আটটি তাজা বোমা। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের ঠিক আগের দিন। ট্যাংরা থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই ক্লাবের চত্বরে মজুত করে রাখা ওই তাজা বোমা থেকে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৬ ০১:০২
Share:

ক্লাব চত্বরের ভিতর থেকে পাওয়া গেল আটটি তাজা বোমা। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের ঠিক আগের দিন।

Advertisement

ট্যাংরা থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই ক্লাবের চত্বরে মজুত করে রাখা ওই তাজা বোমা থেকে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাই ওই বোমা দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম সমীর রাণা এবং সনু।

ট্যাংরার ওই ক্লাবেই দুপুরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে এলাকার বস্তির প্রায় জনা পঞ্চাশেক ছেলে মেয়েকে পড়ানো হয়। এই ঘটনার কিছু পরেই সেখানে এসে উপস্থিত হন এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক শিক্ষিকা। আসে প্রায় জনা কুড়ি ছাত্র ছাত্রীরাও। বোমার খবর পেয়ে তারা ফিরে যায়। ভোটের ঠিক আগেও তিলজলা এবং আলিপুরের দুটি ক্লাব থেকে ২৪টি তাজা বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ দিনের বোমা উদ্ধারের সঙ্গে অবশ্য এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছেন স্থানীয়েরা।

Advertisement

এ দিন ট্যাংরায় গোবিন্দ খটিক রোডে শুয়োরমারি এলাকার বাসিন্দারা রাস্তার ধারেই গুড়িয়া বাবা স্পোর্টিং ক্লাব চত্বরে একটি প্লাস্টিকে মোড়া বোমা দেখতে পান। তাঁরাই ট্যাংরা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে বোমাগুলি উদ্ধার করে। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই ক্লাবে পড়ায়, তার এক শিক্ষিকা রীতা পোদ্দার বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারা যদি বোমাগুলি আগে থেকে চিহ্নিত না করতেন তা হলে ব়ড় বিপদ হতে পারত। বোমা ফেটে কারও মৃত্যু হতে পারত।’’ প্রশ্ন ওঠে, এই ক্লাব চত্বরে বোমা এল কী করে? পুলিশ এই ব্যাপারে কোনও মুখ খোলেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্লাব সদস্যরাই এখানে এই বোমা রেখেছিলেন। ঘটনার পরে ক্লাবের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

বাসিন্দারা জানান, বছর পাঁচেক আগে এই ক্লাবটি এখানে তৈরি হয়। ক্লাবটি কোনও সরকারি অনুদান না পেলেও সদস্যরা শাসকদলের অনুগত বলেও এলাকাবাসীদের দাবি। অভিযোগ, সদস্যদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া এবং মারামারি লেগেই থাকে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা প্রতিদিন দুপুরে নিজেরাই তাঁদের কাছে থাকা একটি চাবি দিয়ে ক্লাবের দরজা খোলেন। মঙ্গলবার রাতেও ক্লাবের কয়েক জন ছেলে ক্লাবের গেট বন্ধ করে বাড়ি ফিরেছিলেন। তার পরেই এ দিন সকালে হঠাৎ ক্লাবে ব্যাগ ভর্তি বোমা পাওয়া যায়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ধৃত সমীরের কাছেই ছিল ক্লাবের চাবি। এ ছাড়াও তার বন্ধু এবং এই ক্লাবেরই অন্য এক সদস্য সনুকেও পুলিশ আটক করেছে।

ধৃত সমীর রানার বাবা নর্মদাশঙ্কর রানা বলেন, ‘‘আমার ছেলে তৃণমূল নেতা স্বপন সমাদ্দারের গোষ্ঠীর কর্মী। ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে প্রায়ই মারামারি লেগে থাকে। তৃণমূলের বিধানসভার প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহার অনুগামীরাই স্বপনবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী। আমার ছেলেকে ফাঁসাতেই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকেরা এই কাজ করেছে। তবে কী কারণে এই গোলমাল তা বলতে পারব না।’’ বাসিন্দারা অবশ্য জানান, ক্লাবের দখল রাখা নিয়েই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেও গোলমাল হতে পারে।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘ছেলেগুলি তৃণমূল কর্মী। এদের নামও শুনেছি। পরিকল্পিত ভাবে সমীরকে ফাঁসানো হয়েছে। এই বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার। এই ঘটনায় দোষী ব্যক্তির শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’’ অন্য দিকে, বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহা বলেন, ‘‘ঘটনাটির বিষয় আমি শুনেছি। এরা তৃণমূল কর্মী বলে জানি না। তবে আমার এলাকায় তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন