ট্রেনের ফাঁকে পা গলে বিপত্তি মেট্রোয়

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন ১২টা ৪৯ মিনিটে রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের সামনের দিক থেকে দমদমগামী মেট্রোয় ওঠার চেষ্টা করেন নিউ আলিপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী স্বাগতা সাউ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

অঘটন: হাসপাতালের পথে ওই তরুণী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

ট্রেনে উঠতে গিয়ে প্ল্যাটফর্মের ফাঁক গলে লাইনে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনা বিরল নয়। এ বার তেমনই ঘটল মেট্রোতেও। বুধবার রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনে ট্রেনে ওঠার সময়ে ট্রেন এবং প্ল্যাটফর্মের ফাঁকে পা ঢুকে যায় কলেজপড়ুয়া এক তরুণীর। কর্তব্যরত মেট্রোকর্মীর উপস্থিত বুদ্ধিতে ওই তরুণী রক্ষা পেলেও তাঁর বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন ১২টা ৪৯ মিনিটে রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের সামনের দিক থেকে দমদমগামী মেট্রোয় ওঠার চেষ্টা করেন নিউ আলিপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী স্বাগতা সাউ। অফিসের ব্যস্ত সময়ে দ্রুত মেট্রোয় উঠতে গিয়ে স্বাগতার পা পিছলে যায়। তাঁর বাঁ পা প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের ফাঁক গলে ভিতরে ঢুকে যায়। স্বাগতার সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক সহপাঠী। তিনি স্বাগতাকে পড়ে যেতে দেখে মেট্রোর দরজা আগলে ধরেন। মেট্রোর একেবারে সামনের দিকে মোটরম্যানের কেবিনের কাছে ঘটনাটি ঘটায় বিষয়টি টের পান চালকও। ফলে সময় হয়ে গেলেও ট্রেনটি ছাড়েনি।
পরিস্থিতি বুঝে তড়িঘড়ি স্বাগতাকে টেনে তুলতে ছুটে আসেন মেট্রোকর্মীরা। তাঁকে সাহায্য করতে গিয়ে এক মেট্রোকর্মী দেখেন, স্বাগতা তড়িদাহত হয়েছেন। প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত আরপিএফ এবং মেট্রোকর্মীরা লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য স্টেশন মাস্টারের ঘরের দিকে ছোটেন। পার্ক স্ট্রিটে মেট্রোর কন্ট্রোল রুমে ফোন করে রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের ওই নির্দিষ্ট অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আবেদন জানানো হয়। তবে তার আগেই স্বাগতাকে উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে ট্রেনের লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা দেওয়া হয়। যার ফলে কয়েক মিনিট বন্ধ থাকে মেট্রো পরিষেবা। মেট্রো কর্মীরাই স্টেশন মাস্টারের সাহায্যে ওই তরুণীকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে এক মেট্রোকর্মী বলেন, “ঘটনার মিনিট দুইয়ের মধ্যে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা গিয়েছে।”

হাসপাতালে নিয়ে গেলে দেখা যায়, তরুণীর বাঁ পায়ের পাতার অনেকটা অংশ পুড়ে গিয়েছে, জখম হয়েছে ডান পা-ও। মেট্রোকর্মীরাই দাঁড়িয়ে থেকে হাসপাতালে ওই তরুণীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ঘণ্টা দুই রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করে ওই তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ দিন হাসপাতালে শুয়ে স্বাগতা বলেন, “রবীন্দ্র সদন যাওয়ার জন্য ট্রেনে উঠছিলাম। কী ভাবে পা পিছলে গেল, বুঝতে পারছি না। তার পরেই হঠাৎ পায়ে একটা তীব্র শক লাগল। ”

Advertisement

চারু মার্কেট থানার পুলিশ বজবজের সেনপুকুরে স্বাগতার বাড়িতে খবর পাঠালে ওই তরুণীর পরিজনেরা হাসপাতালে চলে যান। মেট্রো রেলের এক আধিকারিক বলেন, “কামরায় ওঠার আগে যাত্রীদের পিছলে যাওয়া ঠেকাতে ওই অংশে অ্যান্টি স্কিডিং টাইলস থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনের মধ্যের ফাঁকও তিন-চার ইঞ্চির মধ্যে রাখা হয়।” ওই আধিকারিক আরও জানান, ট্রেন চলার সময়ে চাকা যথেষ্ট গরম থাকে। ফলে তা থেকেও ওই তরুণীর পা পুড়ে গিয়ে থাকতে পারে। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার পরে দ্রুত ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন মেট্রোকর্মীরা। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন