Illegal Constructions

‘বেআইনি নির্মাণ’-এ বাধা দিতে গিয়ে নারকেলডাঙায় প্রহৃত দম্পতি, অভিযোগ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযোগকারী, বছর একষট্টির সঞ্জীব গোস্বামী স্ত্রী রমাকে নিয়ে নারকেলডাঙা নর্থ রোডের একটি বাড়িতে থাকেন। নিঃসন্তান দম্পতি ফেরি করে সংসার চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৬:২৩
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এক দম্পতিকে বেধড়ক মারধর এবং এলাকাছাড়া করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল নারকেলডাঙায়। ওই দম্পতির দাবি, নারকেলডাঙা থানায় অভিযোগ করলেও কোনও সুরাহা হয়নি। এর পরে তাঁরা কলকাতা পুলিশের ইস্টার্ন সাবার্বান ডিভিশনের (ইএসডি) ডিসি এবং পরে লালবাজারে গিয়ে গোয়েন্দা-কর্তার কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন বলে খবর। কিন্তু গত ৩০ এপ্রিল অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে ওই দম্পতির অভিযোগ। লালবাজার যদিও জানিয়েছে, স্থানীয় স্তর থেকে ওই দম্পতির বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে। সব দিক দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

Advertisement

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযোগকারী, বছর একষট্টির সঞ্জীব গোস্বামী স্ত্রী রমাকে নিয়ে নারকেলডাঙা নর্থ রোডের একটি বাড়িতে থাকেন। নিঃসন্তান দম্পতি ফেরি করে সংসার চালান। মাঝেমধ্যে জনসমীক্ষার কাজও করতেন সঞ্জীব। কিন্তু হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে এখন আর সেই কাজে তিনি যান না বলে তাঁর স্ত্রীর দাবি। শনিবার রমা বলেন, ‘‘ঠিকা জমির উপরে দুটো ঘরে আমরা স্বামী-স্ত্রী থাকি। আমাদের এই বাড়ির একাংশের চারটি ঘর প্রোমোটিংয়ের জন্য দিয়ে দিয়েছেন সেগুলির মালিকেরা। কিন্তু আমরা প্রোমোটারকে ঘর দিতে চাই না। কারণ, এখানে সমস্তটাই বেআইনি। আমাদের এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’

রমা দাবি করেন, এলাকার বেআইনি প্রোমোটিং নিয়ে তিনি পুরসভায় অভিযোগ করেছিলেন। এর জন্য ২৩ এপ্রিল তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। রমা বলেন, ‘‘সে দিন ওষুধ কিনে আমরা ফিরছিলাম। হঠাৎ এলাকার এক নেতা আর তাঁর দলবল আমাদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেন।’’ মহিলার অভিযোগ, ওই দিনই তাঁরা নারকেলডাঙা থানায়
অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমাদের বাড়ির যাঁরা নিজেদের ঘর ভেঙে প্রোমোটারকে বহুতল তুলতে দিয়েছেন, তাঁদের দিয়ে সই করিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ থানায় জমা করা হয়েছে। আমার স্বামীকে নারীঘটিত বিষয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। এর পরেই আমরা ডিসি-র অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানাই। ৩০ এপ্রিল লালবাজারে গিয়ে গোয়েন্দা-প্রধানের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করি।’’

Advertisement

এ দিন ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, প্রায় চার কাঠা একটি জমির উপরে এক দিকে বহুতল নির্মাণ করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে ওই দম্পতির ঘর। অবস্থা এমন যে, তাঁদের যাতায়াতেরও রাস্তা রাখা হয়নি। দম্পতি যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তাঁদের কাউকেই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে দম্পতির এক প্রতিবেশীর দাবি, ‘‘এই এলাকায় ঠিকা জমির উপরেই সমস্ত বাড়ি উঠছে। ওই দম্পতির ভয়, পুরসভা ভেঙে দিয়ে যাবে। তাই তিনি নিজেও বাড়ি করবেন না। কাউকে করতেও দেবেন না।’’ এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করা শুরু হয়েছে। বেআইনি নির্মাণ হয়ে থাকলে পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন