Cardiopulmonary Resuscitation

৪৫ মিনিট ধরে বন্ধ হৃৎস্পন্দন! তাঁর চিকিৎসায় বাঁচল রোগী, স্বীকৃতি কলকাতার চিকিৎসকের

২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর আচমকাই বুকের যন্ত্রণায় জ্ঞান হারান করোনা আক্রান্ত সর্বজিৎ সিংহ। টানা ৪৫ মিনিট ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে সিপিআর দিয়ে চালু করা হয় ওই যুবকের হৃৎস্পন্দন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫২
Share:

৪৫ মিনিট ধরে কার্ডিয়োপালমোনারি রিসাসিটেশন, মৃত যুবককে বাঁচালেন চিকিৎসক। প্রতীকী ছবি।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে থাকা যুবকের বার বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হচ্ছিল। পঞ্চম বারের পরে হৃৎস্পন্দন চালু না হওয়ায় ধরেই নেওয়া হয়েছিল, তিনি মৃত। তখনই পরীক্ষামূলক ভাবে নিজের জ্ঞানের প্রয়োগ করতে চান এক চিকিৎসক। টানা ৪৫ মিনিট ধরে বিশেষ পদ্ধতিতে সিপিআর (কার্ডিয়োপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিয়ে চালু করেন ওই যুবকের হৃৎস্পন্দন। করোনাকালে বার্মিংহাম সিটি হাসপাতালের এই ঘটনায় সেই হৃদ্‌রোগ চিকিৎসক, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী অরিজিৎ ঘোষ।

Advertisement

তাঁর এই চিকিৎসা পদ্ধতি ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন’-এর একটি গবেষণাপত্রে সম্প্রতি উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর আচমকাই বুকের যন্ত্রণায় জ্ঞান হারান করোনা আক্রান্ত সর্বজিৎ সিংহ। পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই যুবকের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। দ্রুত তাঁকে বার্মিংহাম সিটি হাসপাতালে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বোঝা যায়, বেশ কয়েক বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে গিয়েছে যুবকের। রক্ত পাম্প করা বন্ধ করেছে হৃৎপিণ্ড। হৃৎস্পন্দনও স্তব্ধ। সিপিআর এবং টানা শক দিয়েও কাজ হচ্ছিল না।

তখনই এক বার শেষ চেষ্টা করার প্রস্তাব দেন অরিজিৎ। সেই মতো সিপিআরের পাশাপাশি ‘ডাবল সিকুয়েন্সিয়াল এক্সটার্নাল ডিফিব্রিলেশন’ দিতে শুরু করেন তিনি। অর্থাৎ, রোগীর বুক, পিঠ ও বগলের মাঝখান বরাবর দু’দিক থেকে বার বার শক দিতে থাকা। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে চালু হয় বন্ধ থাকা হৃৎস্পন্দন।

Advertisement

বর্তমানে যাদবপুরের বাসিন্দা অরিজিৎ বৃহস্পতিবার বলেন, “১৯৯৩ থেকে এই পদ্ধতি সকলের জানা। তবু কার্ডিয়াক ক্যাথল্যাবের বাইরে বিশেষ প্রয়োগ হয় না। আমার মনে হয়েছিল, তখন ওটা প্রয়োগ করা উচিত।” তিনি জানাচ্ছেন, এই প্রক্রিয়া চলাকালীন অ্যানাস্থেটিস্টরা সর্বজিতের মস্তিষ্কের কোষকে বাঁচিয়ে রাখতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন সরবরাহ করেছিলেন। পরে অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি করে তাঁর স্টেন্ট বসানো হয়।

হৃদ্রোগ চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল বলছেন, “এটি এখনও খুব প্রচলিত পদ্ধতি নয়। কিছু গবেষণাপত্রে এই পদ্ধতিতে রোগীকে বাঁচানোর উল্লেখ আছে। তবে আরও কয়েকটি সা‌ফল্য দেখতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন