RG Kar Hospital

হাসপাতালের কর্মীর নামে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য কর্তার

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১৫
Share:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে অপমানজনক মম্তব্য করার অভিযোগ তুললেন হাসপাতালেরই এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে ডেপুটি সুপারের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন শেখ মান্নান নামে ওই কর্মী। বছর পঞ্চান্নের মান্নান মঙ্গলবার বলেন, ‘‘জীবনে কোনও দিন এত অপমানিত বোধ করিনি। এক জন চিকিৎসকের মুখে এমন কথা শুনে চোখে জল চলে এসেছিল।’’ যদিও এই অভিযোগ সম্পর্কে হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সুপ্রিয় চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব।’’

Advertisement

পার্ক সার্কাসের লিন্টন স্ট্রিটের বাসিন্দা মান্নান জানিয়েছেন, গত বছর মার্চ মাসে অসুস্থতার জন্য তিনি চার দিন কাজে আসতে পারেননি। অভিযোগ, সুস্থ হওয়ার পরে ১৯ মার্চ চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি-সহ কাজে যোগ দিতে গেলে ডেপুটি সুপার আপত্তি জানান। ছ’মাস মান্নানকে বেতন ছাড়া বসিয়ে রাখা হয়। এর পরে বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। জুলাইয়ে আদালতের রায় মান্নানের পক্ষে গেলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘রায় বেরোনোর এক মাস পরে কাজে যোগ দিতে গেলে ডেপুটি সুপার আমাকে একটি চিঠিতে সই করিয়ে নেন। ইংরেজিতে লেখা চিঠির বয়ান তখন বুঝতে পারিনি। পরে জানতে পারি, ১৫ মার্চ থেকে ২১ অগস্ট পর্যন্ত কাজের জায়গায় গরহাজির ছিলাম বলে স্বীকারোক্তি লিখিয়ে নিয়েছেন!’’

এ বিষয়ে ফের আদালতে যাওয়ার জন্য নিজের ‘সার্ভিস বুক’ চাইতে মান্নান গিয়েছিলেন ডেপুটি সুপারের কাছে। অভিযোগ, তখনই ওই অপমানজনক মন্তব্য করা হয়। এই ঘটনার ১৬ দিন পরে, গত ২৭ ডিসেম্বর পুলিশের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান মান্নান। সেই অভিযোগপত্রে ডেপুটি সুপারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগও করেন তিনি। কিন্তু এর মাসখানেক পরেও মামলা রুজু না-হওয়ায় তথ্য জানার অধিকার আইনের সাহায্য নেন মান্নান। সেই আরটিআইয়ের জবাবে টালা থানার অফিসার ইন-চার্জ অরুণ দে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন যে, তদন্তের কাজ এখনও চলছে। সেই বক্তব্য মান্নানকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার।

Advertisement

তবে বছর খানেক ধরে আদালত, থানা-পুলিশের চক্কর কেটে চলা ওই প্রৌঢ়ের পাশে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের বাকি সদস্যেরা। মান্নানের প্রতিবেশী শাহনওয়াজ আলম বলেন, ‘‘এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া জরুরি।’’ আর মান্নান বলছেন, ‘‘এর শেষ দেখে ছাড়ব। এটা আমার একার বিষয় নয়।’’ যদিও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর এই অভিযোগের সঙ্গে একমত নন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, এই অভিযোগ ‘বিশ্বাসযোগ্য’ নয়। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই কর্মী কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে থাকার সময়েও সেখানকার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ করেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পরেই তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন