প্রতীকী ছবি।
মোদীর রাজ্যে বিনিয়োগের স্বপ্ন দেখেছিলেন ‘দিদি’র শহরের এক ব্যবসায়ী। সেই স্বপ্ন দেখিয়েই তাঁর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন এক জমি-বাড়ির দালাল। যতক্ষণে প্রতারণার ঘটনা টের পেয়েছিলেন কলকাতার ওই ব্যবসায়ী, ততক্ষণে অভিযুক্ত নাগালের বাইরে। শেষমেশ বৌবাজার থানায় অভিযোগ জানান প্রিন্সেপ স্ট্রিটের ব্যবসায়ী গৌরীশঙ্কর কোঠারি। পাঁচ মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে অভিযুক্ত সঞ্জীব অগ্রবালকে হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের দাবি, আদতে কলকাতার বাসিন্দা সঞ্জীবের সঙ্গে আন্তর্জাতিক টাকা পাচারের যোগসূত্র রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে লখনউয়ে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল থেকে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশ প্রায় ৯৭ কোটি টাকার পুরনো বাতিল হওয়া ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোট বাজেয়াপ্ত করে। সেই চক্রেই গ্রেফতার হয়েছিলেন সঞ্জীব। জেলবন্দি ছিলেন সে রাজ্যেই। বুধবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল সঞ্জীবকে নিয়ে নগর দায়রা আদালতে আসে। আদালতে হাজির করানো হলে সঞ্জীবকে বৌবাজার থানার পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।
লালবাজার সূত্রের দাবি, শুধু গৌরীশঙ্কর নন, আর কে কে সঞ্জীবের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন সেই তদন্ত করা হবে। রাত থেকেই ধৃতকে বিশদে জেরা শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গৌরীশঙ্করবাবু জানিয়েছেন, সঞ্জীব তাঁর পূর্ব পরিচিত। ২০১৫ সাল নাগাদ সঞ্জীব এসে গৌরীশঙ্করবাবুকে প্রস্তাব দেন গুজরাতের একটি কোক প্রস্তুতকারী সংস্থায় তিনি ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা লাভ করতে পারবেন। কথা মতো তিনি সঞ্জীবকে ৫০ লক্ষ টাকাও দেন। সঞ্জীব তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, ওই সংস্থা থেকে টাকা ফেরত মিলবে। সেই মতো কিছু বিলও তিনি গৌরীশঙ্করবাবুকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সঞ্জীবের আশ্বাস মতো টাকা ফেরত পাননি তিনি। তখন গৌরীশঙ্করবাবু গুজরাতের ওই সংস্থায় খোঁজ করে জানতে পারেন, এমন কোনও বিনিয়োগের কথা তারা জানে না। এর পরে সঞ্জীব টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কিছু দিন পরেই গা ঢাকা দেন।
পুলিশের একাংশের দাবি, এই প্রতারণা চক্রের শিকড় অনেক গভীরে। বাতিল নোট উদ্ধারের সময়ে এনআইএ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং আয়কর বিভাগের গোয়েন্দারা সেই চক্রের কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিলেন। কিন্ত কলকাতা পুলিশের সন্দেহ, এই শহরেও সঞ্জীবের কয়েক জন শাগরেদ গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তাঁদেরও খুঁজে বের করার চেষ্টা হবে।