Mysterious Death

দমদমের আবাসনের সিঁড়িতে যুবকের দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগে গ্রেফতার সঙ্গিনী

পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে ‘লিভ-ইন’ করছিলেন সার্থক ও সংহতি। মধুগড় বাজার এলাকায় একটি বহুতলের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে গত এক বছর ধরে ভাড়া থাকছিলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৯
Share:

সার্থক দাস। —ফাইল চিত্র।

সকালে ১০০ ডায়ালে ফোন করেছিলেন এক মহিলা। জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে এক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি পুলিশের সাহায্য চান। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেখা যায়, ওই আবাসনের চারতলার সিঁড়িতে পড়ে রয়েছে এক যুবকের দেহ। আশপাশে চাপ চাপ রক্ত। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে নাগেরবাজার থানা এলাকার দক্ষিণ দমদমের মধুগড়ের একটি বহুতলে। মৃতের নাম সার্থক দাস (৩০)। এই ঘটনায় ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর নাম সংহতি পাল (৩২)। দেহটি ময়না তদন্তের জন্য সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, সার্থক খুন হয়েছেন। খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, গত সোমবারই প্রয়াত হয়েছেন সার্থকের মা।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, বেশ কয়েক বছর ধরে ‘লিভ-ইন’ করছিলেন সার্থক ও সংহতি। মধুগড় বাজার এলাকায় একটি বহুতলের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে গত এক বছর ধরে ভাড়া থাকছিলেন তাঁরা। সংহতির আগের পক্ষের সন্তানও তাঁদের সঙ্গে থাকত। পুলিশের দাবি, প্রথমে খুনের কথা অস্বীকার করলেও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ওই ঘটনায় নিজের যুক্ত থাকার বিষয়টি সংহতি স্বীকার করে নেন। সার্থক পেশায় ছিলেন আলোকচিত্রী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দু’জনের মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। মঙ্গলবার রাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অশান্তি চরমে পৌঁছলে সার্থককে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন সংহতি। ওই যুবকের গলায় ও বুকে আঘাত লাগে। রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পুলিশের অনুমান, বুধবার ভোরে দরজা খুলে ওই অবস্থায় বেরোনোর চেষ্টা করেন সার্থক। কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে কিছুটা নামতেই পড়ে যান তিনি।

সার্থকের দাদা সপ্তক দাস এ দিন গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের শ্যামপুকুর থানায়। সার্থকের বাড়ি যে হেতু উত্তর কলকাতার নলিন সরকার স্ট্রিটে, সে হেতু ভাইয়ের দেহ নেওয়ার কাগুজে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতেই ওই থানায় যান তিনি। সেখানে সপ্তক বলেন, ‘‘ভাই আলাদা হয়ে গিয়েছিল। ওদের সংসারের ব্যাপারে আমরা বিশেষ মাথা গলাতাম না। গত সোমবারই আমাদের মা মারা গিয়েছেন। মায়ের কাজ এখনও হয়নি। তার মধ্যেই এই ঘটনা।’’ তবে, সপ্তক এই ঘটনায় সরাসরি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম, ভাই যাঁর সঙ্গে থাকত, তিনিই ১০০ ডায়ালে ফোন করে ঘটনার কথা জানান। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। ভাইয়ের দেহের ময়না তদন্ত হবে। ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে শুনেছি। ময়না তদন্ত হলে সত্যিটা ঠিকই সামনে আসবে।’’

Advertisement

এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। যদিও স্থানীয়েরা কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তবে, স্থানীয় সূত্রের খবর, সার্থক ও সংহতির মধ্যে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ অনেকেই শুনতে পেতেন। পুলিশ সূত্রের খবর, জেরার মুখে ওই ঘটনা সম্পর্কে মহিলা যা যা দাবি করেছেন, সে সব তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। ঘটনাটি পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে, না কি সাময়িক উত্তেজনার বশে ঘটে গিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন