Mother-Son

ভিডিয়ো দেখে সাত বছর পরে মাকে ফেরালেন ছেলে

রায়গঞ্জের তুলসীতলার বাসিন্দা ঝর্না বছর সাতেক আগে স্বামীর অত্যাচারে ঘর ছাড়েন। দুই ছেলে, তিন মেয়েকে না জানিয়েই একা কলকাতায় আসেন চিকিৎসা করাতে। আর ঘরে ফেরেননি। ঠাঁই হয় শহরের রাজপথে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩ ০৮:০২
Share:

দেখা: ছেলের সঙ্গে ঝর্না যাদব। —নিজস্ব চিত্র।

ডানলপের ফুটপাতবাসী প্রৌঢ়ার দিকে খাবারের প্যাকেট এগিয়ে দিয়েছিলেন সাংসদের দেহরক্ষী। তা প্রত্যাখ্যান করে বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ়া বলেন, ‘‘পলিটিক্যাল প্রোগ্রামের খাবার নেব না।’’ কেন? উত্তর এসেছিল, ‘‘ইমপসিবল, অসম্ভব।’’

Advertisement

ফুটপাতবাসী প্রৌঢ়ার মুখে ইংরেজি কথা শুনে বিস্মিত কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের কর্মী তথা সাংসদ সৌগত রায়ের দেহরক্ষী বাবন দাস ভিডিয়ো তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেন। সেই ভিডিয়োই সাত বছর পরে ঘরে ফেরাল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ঝর্না যাদবকে। ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে মঙ্গলবার ডানলপে মাকে নিতে আসেন তাঁর ছেলে নেহাল। বলেন, ‘‘তখন ছোট ছিলাম, অত বুঝিনি। পরে বুঝেছি, মা কেন বাড়ি ছেড়েছিলেন। মাকে যে ফিরে পাব, ভাবতেই পারিনি।’’

রায়গঞ্জের তুলসীতলার বাসিন্দা ঝর্না বছর সাতেক আগে স্বামীর অত্যাচারে ঘর ছাড়েন। দুই ছেলে, তিন মেয়েকে না জানিয়েই একা কলকাতায় আসেন চিকিৎসা করাতে। আর ঘরে ফেরেননি। ঠাঁই হয় শহরের রাজপথে। গত তিন বছর ছিলেন বরাহনগরের টবিন রোডের ফুটপাতে। সম্প্রতি ডানলপ সেতুর কাছে কাগজ-বোতল বিক্রি, চায়ের দোকানে কাজ করেই দিন চলত তাঁর। স্থানীয়দের কথায়, ‘‘কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন না প্রৌঢ়া। ভিক্ষাও নিতেন না। ছেলেমেয়েদের কথা সবাইকে বলতেন।’’ দিনকয়েক আগে ডানলপ মোড়ে সৌগতের সভা উপলক্ষে বাবনের নজরে আসেন ঝর্না। বাবন বলেন, ‘‘উনি ইংরেজিতে কথা বলায় অবাক হয়ে গিয়ে ভিডিয়ো করি। পরে শুনি, উনিও বাড়ি ফিরতে চান।’

Advertisement

এ দিন প্রথমে ছেলেকে দেখে লাঠি দিয়ে মারতে যান ঝর্না। পরে বুকে জড়িয়ে ধরেন। বলেন, ‘‘এত দিন পরে মনে পড়ল মাকে? চল, বাড়ি যাই।’’ রাতেই দক্ষিণেশ্বর থেকে ফেরার ট্রেনে চাপেন মা-ছেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন