Death

 গুদামে কাজে গিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত ছাত্র

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্দর এলাকায় বহু বড় বড় গুদাম রয়েছে, যেখানে জাহাজে করে আসা জিনিসপত্র রাখা হয়। টন টন মাল খালাসের জন্য আশপাশের এলাকা থেকে অল্পবয়সি ছেলেদের শ্রমিক হিসাবে ডাক পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৪২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ধনতেরাসের দিন বাড়িতে নিজের হাতে ঘর রং করছিলেন এক তরুণ। দুপুরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গুদামে মাল খালাসের কাজের ডাক আসে। কাজে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। ক্রেনের আংটা ছিঁড়ে পাহাড়প্রমাণ ওজনের কাচের পেটি পড়ে ওই ছাত্রের উপরে। তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার পশ্চিম বন্দর থানা এলাকার বিবি সোনাই রোডের একটি গুদামের ভিতরে ঘটে এই দুর্ঘটনা। মৃত ছাত্রের নাম বিশালকুমার রায় (১৯)। তিনি স্থানীয় সোনাই বস্তিতে থাকতেন। আকস্মিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার। মৃতের প্রতিবেশীরাও আনন্দের মরসুমে এমন দুঃসংবাদে কার্যত বাক্যহারা।

Advertisement

ওই এলাকায় বসবাসকারী অধিকাংশ পরিবারই অতি নিম্নবিত্ত। বহু পরিবারেরই অল্পবয়সি তরুণেরা স্থানীয় বিভিন্ন গুদামে শ্রমিকের কাজ করতে যান। বিশালও গত ছ’মাস ধরে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। পাশাপাশি, স্থানীয় একটি স্কুলেও পড়তেন তিনি। পরিবারের লোকজন জানান, কাজের জন্য ঠিকাদার ও তাঁর লোকজনকে বলে রেখেছিলেন বিশাল। এ দিন একটি গুদামে কাচের বড় বড় পেটি নামানোর কাজ ছিল। ঠিকাদার বিশালের এক বন্ধুকে বলেছিলেন লোক জোগাড় করতে। সেই বন্ধু পাঁচ জনকে নিয়ে যান। তার পরেও আরও এক শ্রমিকের প্রয়োজন হওয়ায় বিশালের ডাক পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বন্দর এলাকায় বহু বড় বড় গুদাম রয়েছে, যেখানে জাহাজে করে আসা জিনিসপত্র রাখা হয়। টন টন মাল খালাসের জন্য আশপাশের এলাকা থেকে অল্পবয়সি ছেলেদের শ্রমিক হিসাবে ডাক পড়ে। গুদামের ভিতরে মাল খালাসের জন্য ক্রেন ও বিরাট বিরাট যন্ত্রপাতি থাকে। সেখানে খালাসির কাজ করা তরুণেরাই যন্ত্রপাতি চালানোর কাজ করেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, এ দিন কাজ শুরু করার পরে বেশ কয়েকটি ভারী ভারী বাক্স ওই ছাত্রেরা নামিয়ে নেন। তার পরে মধ্যাহ্নভোজের বিরতি ঘোষণা করা হয়। বিশালের বাবা কৃষ্ণ রায়ের কথায়, ‘‘একে নিয়তি ছাড়া আর কী বলব? আজ তো ওর কাজে যাওয়ারই কথা ছিল না। ধনতেরাসের দিন ঘরে রং করছিল। সকাল থেকে আমরাও আনন্দ করছিলাম। কাজের ডাক পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। তার পরেই শুনি এই দুর্ঘটনার কথা।’’

পুলিশের দাবি, বিশালের সঙ্গে যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁরা জানান, মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরে কাজ শুরু হতেই ক্রেনের মাধ্যমে একটি বিরাট কাচ-বোঝাই বাক্স কন্টেনার থেকে নামানো শুরু হয়। আচমকাই বিকট শব্দে ক্রেনের আংটা ছিঁড়ে সেটি পড়ে যায়। বিশাল সেটির নীচে চাপা পড়েন। কাচ ঢুকে যায় তাঁর মাথায়। তাঁকে আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে ওই ছাত্রকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন