অঙ্কন: সুমন চৌধুরী।
যাত্রী ঢুকে গেলেন মেট্রোর কামরায়। কিন্তু দরজা বন্ধের সময়ে তাঁর চটি-সহ পায়ের কিছুটা রয়ে গেল বাইরে। চালক ট্রেনটি ছেড়ে দিলেন। ততক্ষণে হইচই শুরু হয়েছে কামরায়। চেন টেনে প্ল্যাটফর্মেই মেট্রো থামানো হলে পা ভিতরে ঢোকান যাত্রী। রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বেলগাছিয়া স্টেশনে। কিন্তু পা বাইরে থাকা অবস্থায় কী ভাবে দরজা বন্ধ হয়ে ট্রেন চলল, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
ট্রেনটি দমদম পৌঁছনোর পরে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ওই যাত্রী ওয়াকিব স্টেশন মাস্টারের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো সূত্রে খবর, বেলগাছিয়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকা সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে ঘটনাটি বোঝার চেষ্টা করছেন কর্তারা। এর আগে দরজা বন্ধ করার সময়ে দু’টি পাল্লার ফাঁকে পা, শাড়ি আটকেছে অনেকেরই। কিন্তু দরজা বন্ধ হয়নি, ট্রেনও ছাড়েনি। কিন্তু এ দিন পা আটকানো অবস্থায় দরজা বন্ধ হয়ে মেট্রো চলতে শুরু করে।
পায়ে সামান্য আঘাত ছাড়া ওই যুবকের আর কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি মেট্রোকর্তাদের। তা হলে কেন ঘটনাটিকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা?
মেট্রোকর্তাদের একাংশ মনে করেন, ঘটনাটির গুরুত্ব অন্য জায়গায়। তাঁদের বক্তব্য, মেট্রোর দরজা পাশাপাশি বন্ধ হয়। খোলেও সে ভাবেই। কিন্তু প্রযুক্তি অনুযায়ী, দুই পাল্লার মাঝে কিছু বাধা এলেই ওই ‘ভ্যাকুয়াম দরজা’ পুরোপুরি বন্ধ হবে না। আর গোটা ট্রেনের সবক’টি দরজা ঠিকমতো বন্ধ না হলে চালক কেবিনে দরজা বন্ধের সিগন্যাল পাবেন না। এবং নিয়ম অনুযায়ী সে ক্ষেত্রে ট্রেনও ছাড়তে পারবেন না।
তা হলে এ দিন পা আটকে যাওয়ার পরেও চালকের কেবিন কী করে দরজা বন্ধের সিগন্যাল পেল? এই প্রশ্নটাই এখন ভাবাচ্ছে মেট্রোর ইঞ্জিনিয়ারদের। সেই কারণেই প্ল্যাটফর্মের সিসিটিভির ফুটেজ দেখতে চাইছেন তাঁরা। তবে মেট্রোর রেকগুলির যা হাল, তাতে ওই যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে বলে মনে করেন মেট্রোকর্মীদেরই একাংশ।
সাধারণ ট্রেন ছাড়ার আগে হুইসিল বাজান চালক। মেট্রোতেও হুইসিলের বেল রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেটি বাজলে যাত্রীরা সচেতন হবেন, তাঁরা বুঝবেন দরজা বন্ধ হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ চালকই ওই বেল বাজান না বলে অভিযোগ। কেন বেল বাজানো হয় না, এই প্রশ্নের উত্তরে এ দিন মেট্রোর আধিকারিকেরা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।