Child Death Case

জন্মগত ত্রুটি হৃদ্‌যন্ত্রে, জ্বরে মৃত্যু বালিকার

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হৃদ্‌যন্ত্রে জন্মগত ফুটোর মতো কোমর্বিডিটি থাকার কারণেই মারাত্মক ভাবে ডেঙ্গি না হওয়া সত্ত্বেও জ্বরেই ওই বালিকার অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৫২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দশ বছরের এক বালিকার। বুধবার সকালে, বালিগঞ্জের এক বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত্যুর শংসাপত্রে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হওয়ার পাশাপাশি ভাইরাল জ্বর এবং ডেঙ্গি এনএস-১ পজ়িটিভ হওয়ার উল্লেখ রয়েছে। জানা যাচ্ছে, জন্মের সময় থেকেই হৃদ্‌যন্ত্রে ফুটো ছিল ওই বালিকার।

Advertisement

তিথি হালদার নামে ওই বালিকার বাড়ি কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলিতে। আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের বাসিন্দা অলোক হালদার তাঁর স্ত্রী, মেয়ে তিথি এবং একরত্তি ছেলেকে নিয়ে পাটুলিতে ভাড়া থাকতেন। স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করেন অলোক। জানা গিয়েছে, রান্নাপুজো উপলক্ষে বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই মথুরাপুরের বাড়িতে সপরিবার গিয়েছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার তিথির জ্বর আসে। পরের দিন, অর্থাৎ, শুক্রবার অলোক কলকাতায় ফিরে আসেন মেয়েকে নিয়ে। শনিবার বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই বালিকাকে। কিন্তু কোমর্বিডিটি থাকায় আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য এম আর বাঙুর হাসপাতালে রবিবার স্থানান্তরিত করা হয় তিথিকে। সেখানেও অবস্থার অবনতি হতে শুরু করায় অলোক মেয়েকে মঙ্গলবার বালিগঞ্জ নার্সিংহোম নামে একটি বেসরকারি জায়গায় ভর্তি করান। সেখানেই এ দিন সকালে তিথির মৃত্যু হয়।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, হৃদ্‌যন্ত্রে জন্মগত ফুটোর মতো কোমর্বিডিটি থাকার কারণেই মারাত্মক ভাবে ডেঙ্গি না হওয়া সত্ত্বেও জ্বরেই ওই বালিকার অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। রক্তবাহী নালির মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হতে থাকে। এক সময়ে সেগুলি বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তিথির। পাটুলির স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত ওই বালিকা। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত জানান, তিথি যে বাড়িতে ভাড়া থাকত, তার আশপাশে এক জনও ডেঙ্গি আক্রান্ত নেই। তিনি আরও জানান, গত বছর ১০১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি বছরে ওই ওয়ার্ডে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮২ জন। বাপ্পাদিত্য বলেন, ‘‘সব মৃত্যুই দুঃখের। সেখানে তিথির মতো বাচ্চা মেয়ের মৃত্যুতে আরও বেশি খারাপ লাগছে। কিন্তু এ বছর আমাদের ওয়ার্ডে সত্যিই ডেঙ্গির প্রকোপ কম। জোরদার সচেতনতার প্রচারও চলছে।’’

Advertisement

শহরে ডেঙ্গি ছাড়াও ঘরে ঘরে এখন অনেকে জ্বরে আক্রান্ত। তবে কলকাতায় ডেঙ্গি পরিস্থিতিও ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। চলতি বছরে কলকাতা পুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। ১০ নম্বর বরো এলাকায় আক্রান্ত সব থেকে বেশি। এর পরেই রয়েছে ১২ নম্বর বরো। ১০১ নম্বর ওয়ার্ড ওই ১২ নম্বর বরো এলাকার অন্তর্গত। ১২ নম্বর বরোর ১০২ এবং ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ মারাত্মক ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিছু দিন আগে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের এক তরুণী গৃহবধূ সন্তান প্রসব করার পরে ডেঙ্গিতে মারা যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন