দুপুরেই এসেছিল এসএমএস। এবং তাতেই ছিল আত্মহত্যার ইঙ্গিত!
তড়িঘড়ি ফ্ল্যাটে ছুটে এসেছিলেন আত্মীয়স্বজন। দরজা ভেঙে ঢুকে তাঁরা দেখেন, নলি কাটা অবস্থায় পড়ে আছে সাড়ে তিন বছরের শিশুর নিথর দেহ। আর পাশের ঘরে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন শিশুটির মা।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক অশান্তির জেরে সোমবার বিকেলে ছেলেকে খুন করে মায়ের আত্মঘাতীর হওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে আগরপাড়ায়। মৃতার নাম পায়েল মণ্ডল গোমস (২৭)। শিশুটির নাম অঙ্কুর মণ্ডল গোমস। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে ওই মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশি সূত্রের খবর, আগরপাড়ার তারাপুকুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী পায়েল ও ছেলে অঙ্কুরকে নিয়ে থাকতেন সল্টলেকের এক বেসরকারি স্বাস্থ্য বিমা সংস্থার শাখা ম্যানেজার প্রিয় গোমস। সাড়ে চার বছর আগে কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা প্রফুল্ল মণ্ডলের মেয়ে পায়েলের সঙ্গে বিয়ে হয় কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা প্রিয়র। তাঁরা আগরপাড়ার ফ্ল্যাটে আসেন শেষ আড়াই বছর আগে। পায়েলের বাপের বাড়ির লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই স্ত্রীর সঙ্গে প্রিয়র ঝামেলা চলছিল। প্রফুল্লবাবু বলেন, ‘‘আমার মেয়ের উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত প্রিয়। বারবার নানা ভাবে বুঝিয়েও লাভ হয়নি।’’
এ দিন দুপুরে আত্মীয়দের একটি এসএমএস করেন পায়েল। তাতে সাংসারিক অশান্তির কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানায়। ওই মেসেজ পেয়ে পায়েলের দাদু ও বাবা প্রথমে প্রিয়র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে সকলে মিলে বিকেলে অঙ্কুরদের ফ্ল্যাটে যান। কিন্তু ভিতর থেকে দরজা বন্ধ দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। ডাকাডাকিতে সাড়া না-মেলায় ভাঙা হয় দরজা। পুলিশ জানায়, ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, মেঝেতে চাপচাপ রক্ত। বিছানায় নলি কাটা অবস্থায় পড়ে আছে অঙ্কুর। অন্য ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন পায়েল। ওই তরুণীর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রিয়কে গ্রেফতার করা হয়।