Death

বেনজির লাফ পারদের, ‘গরমে অসুস্থ হয়ে’ মৃত্যু যুবকের

প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে কলকাতার তাপমাত্রা। পারদ চড়ার নিরিখে সোমবার রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। সেটিও ছাপিয়ে গিয়েছে মঙ্গলবারের গরম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৪ ০৫:০২
Share:

জ্বলন্ত: তাপমাত্রা যখন ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার, ধর্মতলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

তীব্র গরমে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে একটি পরিবার। সোমবার সন্ধ্যার সেই ঘটনায় মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মঙ্গলবার দেহের ময়না তদন্ত করিয়েছে পুলিশ। যদিও রাত পর্যন্ত সেই ময়না তদন্তের রিপোর্ট সামনে আসেনি। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, গরমেই ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে, ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এলে তবেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবে বলে দাবি লালবাজারের কর্তাদের।

Advertisement

প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে কলকাতার তাপমাত্রা। পারদ চড়ার নিরিখে সোমবার রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। সেটিও ছাপিয়ে গিয়েছে মঙ্গলবারের গরম। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে ৭.৪ ডিগ্রি বেশি। জানা যাচ্ছে, এই তাপমাত্রা গত ৭০ বছরের মধ্যে এপ্রিলের কোনও এক দিনের নিরিখে সর্বোচ্চ। পশ্চিম দিক থেকে আসা শুষ্ক হাওয়ার কারণে এই জ্বালাপোড়া ভাব আরও বাড়ছে। একাধিক হাসপাতাল সূত্রের খবর, এর ফলে অনেকেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানে ভর্তি হয়েছেন। আলাদা করে প্রশাসনের তরফেও এ ব্যাপারে জোর দিতে বলা হয়েছে হাসপাতালগুলিকে। চিকিৎসকেরাও সাধারণ মানুষকে যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন। তার মধ্যেই সামনে এসেছে এই ঘটনা।

মঙ্গলবার লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ বড়বাজার থানায় এক যুবকের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পৌঁছয়। এর পরে পুলিশ গিয়ে মহাত্মা গান্ধী রোড এবং মল্লিক স্ট্রিটের সংযোগস্থলের এক জায়গায় দেখে, এক যুবক অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছেন। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসকেরা সেখানে তাঁকে ভর্তি নিয়ে নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এর পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ এর পরে জানতে পারে, মৃত যুবকের নাম প্রবন্ধকুমার রানা। বছর উনত্রিশের প্রবন্ধের বাড়ি বাগুইআটির অর্জুনপুর এলাকায়। তাঁর বাবা প্রদীপকুমার রানার মৃত্যু হয়েছে। বাড়িতে বয়স্কা মা, বোন ছাড়াও এক কাকা রয়েছেন। সেই কাকা বিয়ে করেননি। বিয়ে হয়নি প্রবন্ধ এবং তাঁর বোনেরও। ওই পরিবার পুলিশকে জানায়, বেশ কিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন প্রবন্ধ। গত রবিবার সকালে তিনি অর্জুনপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এর পর থেকে আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ওই দিনই বাগুইআটি থানায় গিয়ে ওই পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করে। কিন্তু প্রবন্ধের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ দিন সকালে এর পরে প্রবন্ধের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে পুলিশ।

প্রবন্ধের মা অথবা বোনের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রবন্ধের মায়ের কথা বলার মতো অবস্থাও নেই। এ দিন প্রবন্ধের কাকা গোবিন্দ রানা বললেন, ‘‘মানসিক একটা সমস্যায় ভুগছিল আমার ভাইপো। কিন্তু সেই সমস্যা থেকে মৃত্যু হওয়ার তো কোনও ব্যাপার নেই! মৃতদেহে বাইরে থেকে আসা কোনও আঘাতের চিহ্নও নেই। পুলিশই আমাদের জানিয়েছে, গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল প্রবন্ধ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে সন্ধ্যায় ওর মৃত্যু হয়েছে।’’

লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও পর্যন্ত না এলেও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার কথাটা হাসপাতালের চিকিৎসকই আমাদের জানিয়েছিলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন