নাকের ডগায় দুর্ঘটনা, জানেই না লালবাজার

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বুধবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ লালবাজার স্ট্রিট এবং বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মোড়ে একটি যাত্রিবাহী বাস এবং একটি গাড়ির মধ্যে ধাক্কা লাগে। বাসের ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, গাড়িটির চালক-সহ কয়েক জন আহত হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৪
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে পুলিশের উঁকিঝুঁকি। নিজস্ব চিত্র

লালবাজারের নাকের ডগায় ঘটে গেল একটি দুর্ঘটনা। তার সাক্ষী আমজনতা। কিন্তু পুলিশ তা দেখেছিল কি না, সেটা নিয়েই ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বুধবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ লালবাজার স্ট্রিট এবং বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের মোড়ে একটি যাত্রিবাহী বাস এবং একটি গাড়ির মধ্যে ধাক্কা লাগে। বাসের ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, গাড়িটির চালক-সহ কয়েক জন আহত হন। পুলিশ এসে তাঁদের হাসপাতালেও নিয়ে যায়। যদিও রাত বারোটা নাগাদ লালবাজার কন্ট্রোলে খোঁজ নিলে বলা হয়, এমন কোনও খবর তখনও মেলেনি। ট্র্যাফিক কন্ট্রোলও একই কথা জানায়।

কিছু ক্ষণ পরে ফের ফোন করা হলে জানানো হয়, কন্ট্রোল রুম থেকে লোক ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু দেখতে পাননি। এক প্রত্যক্ষদর্শী দুর্ঘটনার ছবি তোলেন। তাঁর ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে একাধিক পুলিশকর্মী। এমনকী খাকি উর্দি পরা এক পুলিশকর্মীকে দুমড়ে যাওয়া গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভিতরে উঁকিঝুঁকি দিতেও দেখা গিয়েছে। যে পরিবহণ সংস্থার বাসটি দুর্ঘটনায় জড়িয়েছিল তার মালিকও এ কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু রাত পেরিয়ে সকাল হয়ে গেলেও লালবাজার কন্ট্রোল দুর্ঘটনার কথা স্বীকার করেনি। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হলেও কোনও জবাব মেলেনি।

Advertisement

সারা শহরের বিভিন্ন মোড়ে ঘটা করে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তার ফুটেজ দেখে নিয়ম ভাঙা গাড়িকে জরিমানার চিঠি পাঠানো হচ্ছে। তা হলে কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারের নাকের ডগায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা কেন ক্যামেরায় ধরা পড়ল না? প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি লালবাজারের চারপাশেই ক্যামেরার নজরদারির অভাব?

পুলিশ সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, সদর দফতরের চারপাশে ক্যামেরা বিস্তর রয়েছে। তাতে দিনরাত, সব সময়ের ছবিই ধরা পড়ছে। সে ক্ষেত্রে বাস ও গাড়ির ধাক্কার ছবিটিও ধরা পড়াই স্বাভাবিক। তা হলে কন্ট্রোল রুম কেন জানতে পারল না? পুলিশের একাংশের ব্যাখ্যা, রাতের শহরে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকায় যানশাসন নিয়ে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে কলকাতা পুলিশের অন্দরে। তাই ছোটখাটো দুর্ঘটনার কথা হয়তো এড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশ এসেছে।

এক নাগরিকের প্রশ্ন, ইদানীং রাত-শহরে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। পরিবারের কোনও সদস্যের ঘরে ফিরতে দেরি হলে, অনেকেই বিপদের আঁচ করে পুলিশে যোগাযোগ করেন। সে ক্ষেত্রে কোনও দুর্ঘটনার কথা লালবাজার চেপে গেলে তাঁরা সমস্যায় পড়বেন। সেই বিভ্রান্তির দায় কে নেবে? প্রশ্নটা রয়েই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement