Sealdah CVourt

কোভিড-ছোবলে শাপে বর, জামিন অভিযুক্তের

সুস্থ হওয়ার পরে অভিযুক্তকে তদন্তকারী অফিসার বীরেশ্বর রায়ের সামনে হাজিরা দিতে হবে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০৩:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘কোভিড ভাগ্যেই’ জামিন পেলেন জালিয়াতি এবং প্রতারণার ঘটনায় ধৃত এক অভিযুক্ত। পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী নামে ৬২ বছরের ওই অভিযুক্তকে রবিবার শিয়ালদহ আদালত শর্তাধীন জামিনে মুক্তি দিয়েছে। গত ১৬ অগস্ট ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল এন্টালি থানার পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তার পর থেকে থানার লক-আপেই ছিলেন তিনি। আজ, মঙ্গলবার অভিযুক্তের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহের কথা ছিল।

Advertisement

অভিযুক্তের করোনা পরীক্ষা করানো হল কেন?

শিয়ালদহ আদালত সূত্রের খবর, হাতের লেখা পরীক্ষা কিংবা গোপন জবানবন্দির ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। বিচারকের নির্দেশ মেনেই এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত গৌরাঙ্গের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। রবিবারই সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।

Advertisement

ওই মামলার সরকারি কৌঁসুলি মৃন্ময় মিত্র জানান, অভিযুক্তের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় নির্ধারিত দিনের আগে রবিবারই তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালত জানতে চায়, জেল হেফাজতে অভিযুক্তের চিকিৎসা সম্ভব কি না। সম্ভব নয় জানার পরেই বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন। সুস্থ হওয়ার পরে অভিযুক্তকে তদন্তকারী অফিসার বীরেশ্বর রায়ের সামনে হাজিরা দিতে হবে।

লালবাজার জানিয়েছে, অভিযুক্ত সুস্থ হওয়ার পরেই ঠিক করা হবে, তাঁকে ফের হেফাজতে নেওয়ার দরকার আছে কি না। এর আগে একটি জালিয়াতির মামলায় ধৃত ব্যক্তি লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপে থাকার সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি অবশ্য জামিন পাননি। জেল হেফাজতে রেখেই চিকিৎসা হয়েছিল। গৌরাঙ্গের সঙ্গেই লক-আপে ছিল চুরির মামলায় ধৃত এক অভিযুক্ত। তাঁকেও আদালত এ দিন জামিন দিয়েছে। ওই লক-আপ জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, হাবড়ার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ একটি প্রতারণা-চক্রের সদস্য বলে অভিযোগ। ওই মামলায় গত ৬ অগস্ট রাজদীপ রায় নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল এন্টালি থানা। তাঁকে জেরা করে তদন্তকারী অফিসার বীরেশ্বর ১৬ অগস্ট উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় গিয়ে গৌরাঙ্গকে গ্রেফতার করেন। গৌরাঙ্গ মূল অভিযুক্ত রাজদীপের ম্যানেজার ছিলেন। পরের দিন শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে আট দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ধৃতের হাতের লেখা পরীক্ষার নির্দেশও দেওয়া হয়। কারণ, উদ্ধার হওয়া নথির সঙ্গে গৌরাঙ্গের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। বাজেয়াপ্ত বিভিন্ন নথিতে গৌরাঙ্গের সই রয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

পুলিশ জানায়, রাজদীপ ও গৌরাঙ্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৭ সালে তাঁরা এন্টালির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে এক কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ‘ক্যাশ ক্রেডিট’ ঋণ নেন হাবড়ার একটি চালকল বন্ধক রেখে। ঋণের কিস্তি জমা না পড়ায় ব্যাঙ্ক খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, সংস্থাটি ভুয়ো। ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া সব নথিও ভুয়ো। জানা যায়, একই চালকলকে দেখিয়ে অভিযুক্তেরা বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছেন।

২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর এন্টালি থানায় দায়ের হওয়া প্রতারণা এবং জালিয়াতির মামলায় এই দু’জন ছাড়া আরও বেশ কয়েক জন জড়িত বলে পুলিশের দাবি। তাঁদের খোঁজ পেতেই গৌরাঙ্গ সুস্থ হলে ফের তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করতে পারে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন