নিগৃহীত শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই নিগ্রহের অভিযোগ টিএমসিপির

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রকে সল্টলেকে নিজের দফতরে ডেকে পাঠালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিকাশ ভবনে ওই দু’জনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। ছাত্র পরিষদের ওই নেতার উপস্থিতিতেই বুধবার আক্রান্ত হন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। অভিযোগ, নিগ্রহ করা হয়েছে উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ১৩:৫৩
Share:

বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে টিএমসিপির বিক্ষোভ।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্রকে সল্টলেকে নিজের দফতরে ডেকে পাঠালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিকাশ ভবনে ওই দু’জনের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা। ছাত্র পরিষদের ওই নেতার উপস্থিতিতেই বুধবার আক্রান্ত হন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। অভিযোগ, নিগ্রহ করা হয়েছে উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে।

Advertisement

অন্য দিকে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যকে নিগ্রহ ও শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের ওপর হামলার পর এ বার আক্রান্তদের বিরুদ্ধেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করল আক্রমণকারীরা। বুধবার রাতে জোড়াসাঁকো থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এজিএস রুমানা খাতুন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগে দুই ছাত্রকে নিগ্রহের কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওয়েবকুপার সাধারন সম্পাদক কৃষ্ণকলি বসু সহ উপাচার্যের কাছে গিয়ে ছাত্র নিগ্রহের স্বারকলিপি জমা দিয়েছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, কোনও শিক্ষককে হেনস্থা করা হয়নি। উপরন্তু ছাত্ররদেরই নিগ্রহ করা হয়েছে।

লালবাজার সূত্রের খবর, অভিযোগ দায়ের করে মামলা শুরু হলেও পুলিশ এখনই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এক পুলিশ কর্তা বলেন,‘‘ আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ওই দিন কী ঘটেছিল তা আমার খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’’ তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী সহ ওই ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হবে ঠিক সেদিন কী হয়েছিল।

Advertisement


এ দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংগঠনের হাতে শিক্ষকদের হেনস্থার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারও অবস্থানে বসেছেন কুটার সদস্যেরা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে অভিযুক্ত সৌরভের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলছে। এ দিন এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্যাম্পাসে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআই। ফলে কলকাতা, আলিপুর-সহ সমস্ত ক্যাম্পাসেই পড়ুয়াদের হাজিরা বেশ কম। ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশি প্রহরা রয়েছে। কোনও বহিরাগতদের ভিতরে ঢুকছে দেওয়া হচ্ছে না। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা কুটা এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বিকেল তিনটে নাগাদ এসএফআই শিয়ালদহ থেকে কলেজ স্কোয়ার এবং আক্রান্ত শিক্ষকেরা রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল বের করেছে। ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল বের করে ত্রিপুরার শিক্ষক সংগঠনও।


কুটার পাশে বিশিষ্টজনেরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার হরিসাধন ঘোষকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সংগঠন (কুটা) উপাচার্যের ঘরের সামনে একটি অবস্থান বিক্ষোভের কর্মসূচি নিয়েছিল। কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১২টায়। অভিযোগ, কুটা-র সদস্যেরা এসে দেখেন, ওই জায়গায় বসে আছে টিএমসিপি সমর্থকদের সঙ্গে কয়েক জন বহিরাগতও। কুটা-র প্রতিনিধিরা তাদের উঠে যেতে বলায় দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বাগবিতন্ডা। এই সময়েই কয়েক জন কুটা-র সদস্যদের গায়ে হাত তোলে বলে অভিযোগ। এর পর সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনেই কুটা-র সাধারণ সম্পাদক লাইব্রেরি সায়েন্সের প্রধান দিব্যেন্দু পালকে ঘিরে ধরা হয়। ভিড়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। যদিও এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেনি কুটা। তবে তাঁরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন।


মিছিল করছে ত্রিপুরার শিক্ষক সংগঠন।

ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক এবং স্বাতী চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন