মাঝারি বিমান রাখতে তৈরি হবে ১০টি বে

সেই সব ঢাউস বিমান দাঁড় করানোর জন্য তৈরি হয়েছিল বড় বড় পার্কিং বে। এখন‌ বিমানবন্দরের যেখানে ভিআইপি গেট, তার সামনেই পর পর ৬টি (বে নম্বর ৪১-৪৬) বড় পার্কিং বে ছিল।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

তখন কলকাতা থেকে লন্ডন যেত এয়ার ইন্ডিয়ার দোতলা বোয়িং ৭৪৭ বিমান। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজও নিয়ে আসতো ঢাউস বিমান। ক্যাথে প্যাসিফিক, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, প্যানঅ্যাম, লুফৎহানসা, এরোফ্লোট, জাপান এয়ারলাইন্স— সব বড় বিদেশি বিমানসংস্থা ছুঁয়ে যেতো শহরকে।

Advertisement

সেই সব ঢাউস বিমান দাঁড় করানোর জন্য তৈরি হয়েছিল বড় বড় পার্কিং বে। এখন‌ বিমানবন্দরের যেখানে ভিআইপি গেট, তার সামনেই পর পর ৬টি (বে নম্বর ৪১-৪৬) বড় পার্কিং বে ছিল। এখনও রয়েছে। সেখানে যাতে বোয়িং ৭৪৭-এর মতো বড় বিমান দাঁড়াতে পারে, তার জন্য দু’টি পার্কিং বে-এর মাঝে জায়গাও অনেক বেশি।

কিন্তু, সে সব এখন অতীত। এ শহর থেকে ইউরোপ, আমেরিকায় সরাসরি কোনও উড়ান নেই। মুখ ফিরিয়ে চলে গিয়েছে বেশির ভাগ বিমানসংস্থাই। বড় বিমানের আনাগোনা কমেছে। তার জায়গা নিয়েছে এয়ারবাস ৩২০, বোয়িং ৭৩৭-এর মতো মাঝারি বিমান। এগুলিতে গড়পড়তা ১৫০ থেকে ১৮০ জন যাত্রী ধরে। আরও ছোট এটিআর, বম্বারডিয়ার চালানোর তোড়জোড় চলছে। চাহিদা বাড়ছে পার্কিং বে-র। সব মিলিয়ে ৫১টি পার্কিং বে-তেও কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। তাই ঠিক হয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরের সবচেয়ে পুরনো সেই ৬টি বড় পার্কিং বে-কে এ বার দশটি মাঝারি বে-তে পরিবর্তিত করা হবে। তাতে অতিরিক্ত ৪টি বে পাওয়া যাবে। বড় বিমান এলে তখন দু’টি বে খালি করে একটি বিমান দাঁড় করানো হবে।

Advertisement

এখন কলকাতায় এমিরেটস, তাই, কাতারের যে বড় বিমান ওঠানামা করে, সেগুলি অ্যারোব্রিজে দাঁড়ায়। ৪১ থেকে ৪৬ নম্বর বে কার্যত খালিই পড়ে থাকছিল। পণ্য নিয়ে বড় বিমান এলে বা কোনও বড় বিদেশি বিমান জরুরি অবতরণ করলে তখন ওই বে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তা ছাড়া রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিআইপি-দের বিমানের জন্যও ওই বে-গুলি ব্যবহার করা হয়।

কেন্দ্রীয় সরকার আঞ্চলিক উড়ান প্রকল্প চালু করায় আগামী কয়েক মাসে ছোট বিমানও নিয়মিত ওঠানামা করবে কলকাতা থেকে। ছোট বিমান এলে সেগুলি যাতে মাঝারি বিমানের বে দখল করে না নেয়, তার জন্য রানওয়ের দক্ষিণ দিকে এয়ার ইন্ডিয়া হ্যাঙ্গারের সামনে মোট ৮টি ছোট বিমানের পার্কিং বে তৈরি করা হচ্ছে।

সংস্থাগুলি রাতে বিমান কলকাতায় রেখে, ছোটখাটো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভোরে যাত্রীদের নিয়ে অন্য শহরে উড়ে যায়। রাতে বিমান রাখার জন্য তাদেরও পার্কিং লাগে। কলকাতায় রাতে বিমান রাখার জন্য যে ৩৫টি পার্কিং বে রয়েছে, সেগুলি ভর্তি। অথচ বিমানসংস্থাগুলি কলকাতায় রাতে আরও বিমান রাখতে চাইছে। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত জানিয়েছেন, নতুন ১২টি পার্কিং বে-র মধ্যে থাকছে ছোট বিমানের জন্য ৮টি, বড় বিমানের জন্য ৪টি। তাঁর কথায়, ‘‘রাতে আরও বিমান রাখার জন্য বিমানসংস্থাগুলি আবেদন করে রেখেছে। নতুন বে-গুলির মধ্যে কতগুলি রাতের পার্কিং-এর জন্য দেওয়া হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’

কলকাতা বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নির্দেশ এসেছে দিল্লি থেকে। সেই মতো, ঠিক হয়েছে পিক আওয়ারে কলকাতার প্রধান রানওয়েতে ঘণ্টায় ৩০টি-র জায়গায় ৩৫টি বিমান ওঠানামা করবে। তার জন্য কলকাতায় নামতে আসা দু’টি বিমানের মাঝের দূরত্ব ১২ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ১০ কিলোমিটার করা হবে। এ বছরের মধ্যেই তা চালু হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কিন্তু, শুধু বিমান নামলেই তো হবে না। বিমান দাঁড় করানোর পার্কিং বে-ও চাই। এই পার্কিং বে-র সংখ্যা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন