ভস্মীভূত: আগুন লাগার পরে কাপড়ের সেই ‘বেআইনি’ গুদাম ঘর। রবিবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী
নিয়ম ভাঙাই এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে শহরে। দিন চারেক আগে হো চি মিন সরণির বিলাসবহুল হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের পরে দমকল-বিধি না মানার একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছিল হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের উত্তর কলকাতায় শিয়ালদহের কাছে একটি বসতবাড়িতে আগুনে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, পুরসভা ও দমকলকে অন্ধকারে রেখে বাড়ির একতলা বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। দমকলের অনুমতি ছাড়াই চারতলা ওই বাড়ির একতলায় কাপড়ের গুদাম চলছিল।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে খবর, রবিবার বেলা ১২টা নাগাদ উত্তর কলকাতার রামকৃষ্ণ দাস লেনের চারতলা বাড়িটির একতলা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের চিৎকারে তিনতলা থেকে বাসিন্দারা নীচে নেমে আসতে পারলেও দোতলায় আটকে পড়েন এক মহিলা। দমকল এসে প্রায় আধ ঘণ্টা পরে দোতলার জানলার গ্রিল কেটে তাঁকে উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, চারতলার বাড়িটির একতলায় দু’টি গুদাম ঘর। একটি কাপড়ের, অন্যটি মুদির দোকানের। এ দিন প্রথমে কাপড়ের গুদাম ঘরটিতে আগুন লাগে। তখন ঘরটি বন্ধ ছিল। কাপড় ডাঁই হয়ে থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দোতলায় আটকে থাকা ওই মহিলা জবা দাস বলেন, ‘‘রান্না করছিলাম। প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। কিছুক্ষণ পরে যখন বুঝতে পারলাম, তখন দোতলার ঘর থেকে নামতেও পারছি না, উপরেও যেতে পারছি না। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়। রান্নাঘরের জানলার কাছে প্রায় আধ ঘণ্টা সিঁটিয়ে ছিলাম। শেষে দমকলের কর্মীরা
এসে বাঁচালেন।’’
ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর, তৃণমূলের সাধনা বসু বলেন, ‘‘বাড়িটি বসতবাড়ি বলেই জানতাম। আগুন লাগার পরে জানতে পারলাম, একতলার দু’টি ঘর বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল।’’ সাধনাদেবীর অভিযোগ, ‘‘পুরসভাকে না জানিয়েই বাড়ির মালিক দু’টি ঘর গুদাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আমি পুরো বিষয়টি মেয়রকে জানাব।’’ একতলায় যে ভাবে দু’টি গুদাম ঘর চলছিল, তাতে অবাক স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁরাও জানতেন, বাড়িটির একতলায় লোকজন বাস করতেন। এক প্রতিবেশীর অভিযোগ, ‘‘এক শ্রেণির মানুষের জন্যই ভুগতে হচ্ছে সমাজের বড় অংশকে। নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’’