ক্লারা বংশরাই খোঙসিট
বিমানসেবিকা ক্লারা বংশরাই খোঙসিটের মৃত্যুর তদন্ত শেষ করে মামলা বন্ধ করল পুলিশ। তদন্তকারীদের মতে, ক্লারার পড়ে যাওয়া নিছকই একটি দুর্ঘটনা।
ভিআইপি রোড লাগোয়া প্রফুল্লকাননে নিজের ফ্ল্যাটের সামনের রাস্তায় গত ১৬ অগস্ট ভোরে বিমানসেবিকা ক্লারার (২৩) রক্তাক্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর মৃত্যু নিয়ে তদন্তে নেমেছিল বিধাননগর পুলিশ। আদতে শিলঙের বাসিন্দা ক্লারা এই ঘটনার এক বছর আগে এক বেসরকারি বিমান সংস্থায় যোগ দেন। জানা যায়, ঘটনার আগের দিন স্বাধীনতা দিবসে, বেঙ্গালুরু থেকে যাত্রীদের নিয়ে সন্ধ্যায় কলকাতায় ফেরেন ক্লারা। নিজের ফ্ল্যাটে এসে পার্ক স্ট্রিটে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে চলে যান।
সেখান থেকে মাঝ রাতে দুই বন্ধুকে নিয়ে তিনতলায় নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন ক্লারা। তদন্তে উঠে আসে, গ্রিলহীন কাচের স্লাইডিং জানলা গলে নীচে পড়ে মৃত্যু হয় ক্লারার।
দেহ উদ্ধারের সময়ে ওই ফ্ল্যাটেই ছিলেন ক্লারার দুই বন্ধু। ফলে তিনি বেসামাল হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন, নাকি কেউ ঠেলে ফেলে দেয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
সম্প্রতি ক্লারার মৃত্যুর তদন্ত সম্পূর্ণ করেছে বিধাননগর পুলিশ। পুলিশের এক কর্তা জানান, দীর্ঘ তদন্তের শেষে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন, জানলা গলে ক্লারার পড়ে যাওয়া নিছক দুর্ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। ময়না-তদন্ত, ভিসেরা রিপোর্ট এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমনটা মনে করেছে পুলিশ। তাই মামলাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘জানলার নীচেই ছিল কার্নিস। কেউ ঠেলে দিলে দেহটি কার্নিসে না লেগে সোজা রাস্তায় পড়ার কথা। কিন্তু ক্লারা পড়ে যাওয়ার সময়ে যে কার্নিসে ধাক্কা খেয়েছিলেন, তার প্রমাণ মিলেছে।’’ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ ও ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকের দল কয়েক বার ঘটনাস্থল ঘুরে নিশ্চিত হয়েছেন যে, কাকভোরে নিজেই জানলা গলে পড়ে যান ক্লারা। ঘর থেকে ক্লারার কোনও সুইসাইড নোট বা জোরালো প্রমাণ না মেলায় আত্মহত্যার তত্ত্বও উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, সম্ভবত সিগারেট খাওয়ার জন্য জানলা খোলেন ক্লারা। ঘরে তখন এসি চলছিল। সেই সময়ে কোনও ভাবে টাল সামলাতে না পেরে তিনি পড়ে যান।