Pollution

রেলের জঞ্জালে আগুন, দূষণ-গ্রাসে সাঁতরাগাছি ঝিল

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, সাঁতরাগাছি ঝিলে রেলের বর্জ্য ফেলার যে অভিযোগ উঠেছে, তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৩
Share:

অস্বাস্থ্যকর: সাঁতরাগাছি ঝিলের একাংশে ফেলা আবর্জনায় আগুন লাগানো হয়েছে। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দিনের পর দিন আবর্জনা ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছিল সাঁতরাগাছি ঝিলের পশ্চিম দিকের বেশ কিছুটা অংশ। এর পরে সেই আবর্জনায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ ঘটানোর অভিযোগ উঠল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রেল শুধু ২০১৬ সালের সংশোধিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনের অবমাননাই করেনি, ভয়াবহ মাত্রায় দূষণ ছড়িয়ে ওই ঝিলে আসা পরিযায়ী পাখিদেরও জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। আগামী দিনে পরিযায়ী পাখিরা ওই ঝিলে আদৌ আর আসবে কি না, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়। এ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, সাঁতরাগাছি ঝিলে রেলের বর্জ্য ফেলার যে অভিযোগ উঠেছে, তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে। বর্জ্যে আগুন লাগানোর ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে সাঁতরাগাছি লোকো শেডের উল্টো দিকে ওই ঝিলের একটি অংশকে ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করে সেখানে রেলের সমস্ত আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল। খাবারের উচ্ছিষ্ট থেকে প্লাস্টিক বা থার্মোকলের প্লেট, বাটি— সব রকম বর্জ্যই ফেলা হত সেখানে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, দিনের পর দিন আবর্জনা ফেলায় ওই

Advertisement

জলাশয়ের অনেকটা অংশ ইতিমধ্যেই ভরাট হয়ে গিয়েছে। দিন তিনেক আগে সেই আবর্জনাতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া আর দুর্গন্ধে ভরে যায় গোটা এলাকা।

মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তখনও ধোঁয়া আর আগুন বেরোচ্ছে আবর্জনার স্তূপ থেকে। আগুনে ঝলসে গিয়েছে আশপাশের গাছের পাতাও। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পরিবেশকর্মী সুভাষবাবু। তিনি জানান, সরস্বতী খালের একাংশও এ ভাবে আবর্জনা ফেলে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সুভাষবাবু বলেন, ‘‘রেল যা করেছে, তাতে ২০০৬ সালের সংশোধিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। এই অপরাধে জেল ও জরিমানা দুটোই হতে পারে। রেল শুধু

আবর্জনাই ফেলেনি, তাতে আবার আগুন লাগিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করেছে। এ নিয়ে আমি পরিবেশ আদালতে মামলা করব।’’ সুভাষবাবুর দাবি, সাঁতরাগাছি ঝিলের ওই অংশে পরিবেশের যা ক্ষতি হয়েছে, তাতে আগামী দিনে পরিযায়ী পাখিরা আর না-ও আসতে পারে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তাদের দাবি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে। শর্ত অনুযায়ী, রেলের যাবতীয় বর্জ্য নিজেদের প্লান্টে নিয়ে গিয়ে ফেলার কথা তাদের। কিন্তু সেই শর্ত উপেক্ষা করে ওই সংস্থার কর্মীরা মাঝেমধ্যেই ঝিলের আশপাশে বর্জ্য ফেলে দিচ্ছেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘রেলের বর্জ্য ফেলার ব্যাপারে যে অভিযোগ উঠেছে, তা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। বর্জ্যে যাঁরাই আগুন লাগিয়ে থাকুন না কেন, খুব খারাপ কাজ করেছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন