কলকাতা থেকে সরে যাচ্ছে প্রেসিডেন্সি ও আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।
আলিপুর জেলের নতুন ভবন তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বারুইপুরে। চলতি বছরের শেষের দিকে বারুইপুরের সেই ভবনেই পাকাপাকি ভাবে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ওই জেল। প্রেসিডেন্সি সংশাধনাগার তৈরির জন্য ‘কলকাতা মেট্রোপলিটল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’ (কেএমডিএ) রাজ্য কারা দফতরকে সাড়ে ৩৮ একর জমি দিয়েছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে ওই জেল তৈরির কাজও দ্রুত শুরু হবে বলে কারামন্ত্রী অবনীমোহন জোয়ারদার জানিয়েছেন। মন্ত্রী এও জানান, জেলের মধ্যে থাকা হেরিটেজ ওয়ার্ডগুলি ভাঙা হবে না।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুর জেলের খুব কাছেই থাকেন। ওই জেলে জ্যামার বসানো আছে। তার ফলে মুখ্যমন্ত্রীর টেলিফোনে কথাবার্তা বলতে অসুবিধা হয়। এ নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সরকারি ভাবে এ কথা বলা হলেও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, শহরের মধ্যে আলিপুরের মতো দু’টি ‘প্রাইম ল্যান্ড’-কে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে সরকারের বিপুল লাভ হবে। তাই আলিপুরের মতো ব্যস্ত এলাকায় দু’টি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার রাখতে চায় না সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাব বুঝতে পেরেই কারা দফতরের কর্তারা বারুইপুরে জমি খোঁজা শুরু করেন। মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সরকারি অফিসারেরা বারুইপুরে গিয়ে সম্প্রতি ওই জমি সরেজমিন দেখেও এসেছেন।
কারা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কলকাতার আলিপুর এলাকায় যেমন আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেল পাশাপাশি রয়েছে, বারুইপুরেও তেমন পাশাপাশি থাকবে জেল দু’টি।’’ আলিপুর ও প্রেসিডেন্সি জেল দু’টি সরে গেলে ওই জমি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা ছাড়াও সরকারি ভবন হিসেবে ব্যবহারের ভাবনাও রয়েছে। নবান্নের খুব কাছেই আলিপুর। তাই সরকারি কাজের সুবিধে হবে।
আরও পড়ুন: সেই রাতে বিক্রমকে মদ্যপান করতে দেখেছিলেন অনেকেই?
কারা দফতর সূত্রে খবর, আলিপুর এবং প্রেসিডেন্সি জেলে কম-বেশি চার হাজার বন্দি থাকেন। সম পরিমাণ জায়গা নিয়েই বারুইপুরে দু’টি সংশোধনাগার তৈরি হচ্ছে। দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানান, আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জন্য প্রায় ৫৯ বিঘা সরকারি জমি মিলেছে। প্রেসিডেন্সির জন্য মিলেছে সাড়ে ৩৮ বিঘা জমি। জেল দু’টি তৈরি হলে প্রথমে সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের নিয়ে যাওয়া হবে। তার পরে বিচারাধীন বন্দিদের পাঠানো হবে। কারামন্ত্রী জানান, নতুন দু’টি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই ভিডিও কনফারেন্স ব্যবস্থা থাকবে। বিচারের কাজ জেলের ভিতরেই যাতে করা যায়, সেই জন্য ওই ব্যবস্থা।