সুনসান আলিপুর আদালত চত্বর। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
হাওড়া আদালতের ঘটনার জেরে আইনজীবীরা কাজে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় অচলাবস্থা চলছে রাজ্যের অধিকাংশ আদালতে। সোমবার যার জেরে আলিপুর ফৌজদারি আদালত চত্বরে বন্ধ রইল সমস্ত খাবারের দোকান। পাশাপাশি নোটারি-এফিডেভিট করণিকেরাও কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হলেন। এই ঘটনায় জোরজুলুমের অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরেই আদালত চত্বরে পুলিশের গাড়ি ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছিল। এমনকি, গত শনিবার আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারককে এজলাসে আসতে বাধা দেওয়া হয় বলেও আন্দোলকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। সোমবারও পুলিশের কোনও গাড়ি আদালত চত্বরে ঢুকতে পারেনি। উপরন্তু এ দিন আদালত চত্বরের সমস্ত খাবারের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ দিন আদালত চত্বরে টাইপিস্টদেরও কাজ করতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এক জন টাইপিস্টকে নাকি মারধরও করা হয়েছে। তাঁর ল্যাপটপও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আদালত চত্বরের ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘শনিবারই আমাদের দোকান খুলতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু আলিপুর আদালত চত্বরে শুধু বিচারপ্রার্থীরা আসেন না। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের একাধিক অফিস রয়েছে এখানে। সেখানকার কর্মীরা আমাদের দোকান থেকে খাবার কিনে খান। কিন্তু সোমবার জোর করে সব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আইনজীবীদের আন্দোলনের সঙ্গে নোটারি-এফিডেভিটের কোনও সর্ম্পক নেই। তা সত্ত্বেও নোটারি অফিসারদের বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবারও আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের ঘরের সামনে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ দেখান। এ দিন আন্দোলনকারীদের বাধাতেই বিচারক এজলাসে আসেননি বলে অভিযোগ। পুলিশের গাড়িও আদালত চত্বরে ঢুকতে বাধা পায়। এ দিন বিচারকের সামনে মামলার নথিও পেশ করতে পারেনি পুলিশ।
আলিপুর আদালতেরই আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন ওই আন্দোলন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আসামিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি, বিচারকের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরাও আইনি জটিলতার সামনে পড়ছেন। কোনও ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার হচ্ছেন। কিন্তু তাঁর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ে বার কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হবে। মানুষের হয়রানির বিষয়টিও বৈঠকে তোলা হবে।’’