দিদির রাজ্যে ‘খাঁটি রক্ত’ আসছে মোদীর রাজ্য থেকে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কলকাতার চিড়িয়াখানায় দেখা পাওয়া যাবে আরও এক জোড়া সিংহের।
আলিপুর চিড়িয়াখানায় বহু দিন হল আফ্রিকার সিংহ নেই। ভারতীয় পশুরাজ থাকলেও সেগুলির মাত্র একটি খাঁটি ভারতীয় রক্তের। তাই তরতাজা আরও এক জোড়া খাঁটি ভারতীয় সিংহ আনতে জুনাগড় চিড়িয়াখানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এ রাজ্যের জু অথরিটির কর্তারা। সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হয়েছে। জুনাগড়ের শাকারবাগ চিড়িয়াখানা থেকে আলিপুরে আসবে গিরের ‘রাজা’।
‘‘গুজরাত থেকে সিংহ আনতে হলে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি দরকার হয়। তা পাওয়া গিয়েছে। এখন সেন্ট্রাল জু অথরিটি সবুজ সঙ্কেত দিলেই সিংহ নিয়ে আসা হবে,’’ মন্তব্য রাজ্য জু অথরিটির সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব। জু অথরিটি সূত্রের খবর, লেনদেনে দু’পক্ষ রাজি থাকলে কেন্দ্রীয় কর্তারা তাতে সাধারণত বাগড়া দেন না।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত জানান, তাঁদের ভাঁড়ারে এখন চারটি ভারতীয় সিংহ-সিংহী আছে। তার মধ্যে দুর্গা নামের একটি সিংহীর শরীরেই খাঁটি ভারতীয় রক্ত রয়েছে। বাকি দু’টি সিংহী এবং একটি সিংহ আফ্রিকান ও ভারতীয় সিংহের সংকর। ‘‘দুর্গা বুড়িয়েও গিয়েছে। ফলে ও আর বংশবৃদ্ধিও করতে পারবে না,’’ বলছেন আশিসবাবু। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, দুর্গা ছাড়া বাকি সিংহগুলিরও বয়স বেড়েছে। ফলে তাদের দিয়েও সিংহের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব নয়।
সিংহ আনতে গুজরাতেই কেন? দেশের অন্য কোথাও কি সিংহ নেই?
চি়ড়িয়াখানার কর্তাদের জবাব, দেশের অনেক চিড়িয়াখানায় সিংহ থাকলেই হল না। বিনিময়ের জন্য সংখ্যায় উদ্বৃত্তও হতে হবে। তবেই তো এক চিড়িয়াখানা থেকে অন্য চিড়িয়াখানায় সিংহ পাঠানো হবে। ‘‘তা ছাড়া খাঁটি ভারতীয় সিংহ কি না, সেটাও দেখা জরুরি। ভারতে পশুরাজের বাসভূমি গুজরাতের জুনাগড়ের শাকারবাগ চিড়িয়াখানায় খাঁটি সিংহ মিলবে,’’ বলছেন জু অথরিটির এক কর্তা।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, সিংহ আনা নিয়ে কথা হয়েছিল হায়দরাবাদ চিড়িয়াখানার সঙ্গেও। কিন্তু সেখানে সিংহের রক্ত ‘খাঁটি’ কি না, তা নিশ্চিত নয়। সে কারণে জুনাগড়ই প্রথম পছন্দ চিড়িয়াখানার কর্তাদের। তবে আলিপুরের কর্তারা বলছেন, ‘‘সিংহ আনতে মোটেও ঝুলি পাতিনি আমরা। জুনাগড়েরও জিরাফ প্রয়োজন। আর বর্তমানে দেশের মধ্যে সব থেকে ভাল জিরাফ কলকাতাতেই রয়েছে।’’ তবে জিরাফ পাঠানো নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। চিড়িয়াখানার একটি সূত্র জানাচ্ছে, আলিপুরের একটি মাদী জিরাফ অন্তঃসত্ত্বা। আগামী মাসেই সে প্রসব করতে পারে। সেই কারণেই এখন অপেক্ষা করা হচ্ছে।