প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে নতুন কেউ ভাড়া এলে বা পরিচারক-পরিচারিকা কাজে যোগ দিলে সেই তথ্য যাতে পুলিশের কাছে থাকে, সে জন্য তথ্যভাণ্ডার তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। বিধাননগর পুর প্রশাসনও আলাদা করে তথ্যভাণ্ডার তৈরির কথা জানিয়েছে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ভাড়াটেদের পরিচিতি বা কেন ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ বা পুর প্রশাসনের কাছে থাকছে না।
সম্প্রতি কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লির একটি ঘটনায় ফের এই ছবিটাই দেখা গিয়েছে। সেখানে একটি বাড়িতে ছিলেন পঞ্জাবের বাসিন্দা এক তরুণী। তাঁকে ওই ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। শেষে বাসিন্দাদের সহায়তায় তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
বাসিন্দারা বলছেন, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কেষ্টপুর, বাগুইআটি, রাজারহাট, নিউ টাউন বা সল্টলেকে অসংখ্য মানুষ ভাড়া নিয়ে বা পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকেন। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে তাঁদের ঘিরেই ঘটছে বিভিন্ন অপরাধ। বাগুইআটি থেকে ভিন্ দেশের দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। সম্প্রতি কৈখালি থেকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়েছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, রানিগঞ্জের ওই ব্যবসায়ী কৈখালিতে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু সেই তথ্য ছিল না পুলিশের কাছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিউ টাউন, রাজারহাট-গোপালপুর থেকে শুরু করে বাগুইআটি, কেষ্টপুরে ভিন্ রাজ্যের বহু তরুণ-তরুণী কর্মসূত্রে থাকেন। কিন্তু প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, তাঁদের কাজকর্ম ও পরিচিতি সম্পর্কে প্রশাসন দূর অস্ত্, এলাকার বাসিন্দাদের কাছেও কোনও তথ্য থাকছে না। কেষ্টপুরের এক বাসিন্দা শ্যাম মণ্ডল বলেন, ‘‘এক এক জন ভাড়াটের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয়। তাঁরা যখন বাড়ি ফেরেন, সঙ্গে থাকেন অপরিচিত লোকজন।’’
অথচ পুলিশ-প্রশাসন অনেক দিন ধরে বাসিন্দাদের কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করছে। কিন্তু অভিযোগ, বাসিন্দাদের একাংশ এখনও পুলিশকে সহযোগিতা করছেন না। তাঁদের বক্তব্য, ভাড়াটেদের কাছে সচিত্র পরিচয়পত্র চাইলে তাঁরা দিতে রাজি হন না।
বিধাননগর পুলিশের একাংশের কথায়, সল্টলেক বা নিউ টাউনে বিভিন্ন ব্লক এবং আবাসন রয়েছে। কিন্তু কেষ্টপুর বা রাজারহাট-গোপালপুরে তেমন নয়। ফলে সেখানে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। যদিও বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান শবরী রাজকুমার জানান, আগের তুলনায় তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সাড়া মিলেছে। তবে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। তা কাটানোর চেষ্টা চলছে।