বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগে মঙ্গলবার এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে তিলজলা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম বক্কর (৪২)। বুধবার তাকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মাটির তলায় কেব্ল লাইন কেটে স্থানীয় মানুষের ঘরে সংযোগ দিয়ে টাকা আদায় করত বক্কর। সিইএসসি সেই খবর পেয়ে তিলজলা থানায় তার নামে অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ ছিল, তিলজলা, তপসিয়া-সহ গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ প্রভৃতি এলাকায় কিছু লোক কেব্ল লাইন কেটে বিদ্যুৎ চুরি করে মানুষের বাড়ি বাড়ি তা সরবরাহ করছে। সিইএসসি-র এক কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন রকম ‘রক্ষাকবচ’ নিয়েও কোনও লাভ হচ্ছিল না। যে কোনও উপায়ে লাইন কেটে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছিল। এক শ্রেণির মানুষ সস্তায় চুরির বিদ্যুৎ ব্যবহারের লোভে সেই সংযোগও নিচ্ছিলেন। তাতে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনাও ঘটত।’’ গত বছর চুরির লাইনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে ওই কর্তার দাবি।
সূত্রের খবর, ৪০০ কেভি-র যে কেব্ল লাইনটি বক্কর কেটেছিল, সেটি কিছু দিন আগেই মাটির তলায় পুঁতেছিল সিইএসসি। রাতের অন্ধকারে সেই কেব্ল লাইন কেটে হুকিং করে মাটি চাপা দিয়ে দেয় বক্কর। তার পরে আশপাশের বাড়ির ছাদের উপর দিয়ে সেই লাইন নিয়ে গিয়ে সে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছিল। পরিদর্শনে গিয়ে সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা দেখেন, ওই অঞ্চলে তাদের ট্রান্সফর্মার থেকে হিসেবের অনেক বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে। সেই সন্দেহ থেকেই খোঁজ নিতে গিয়ে বক্করের কীর্তি ধরে ফেলেন তাঁরা।
সিইএসসি-র পরিষেবা এলাকায় বিদ্যুৎ চুরির কারণে প্রতি বছরই কয়েক কোটি টাকা আর্থিক লোকসান হয়। যার মধ্যে তিলজলা-তপসিয়া-গার্ডেনরিচের মতো এলাকায় সব থেকে বেশি। সংস্থার হিসেবে ওই সব অঞ্চলে তাদের গড় লোকসান হয় ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ, ১০০ টাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে ৪০ টাকা বিদ্যুৎ বিল বাবদ আদায় হয়। বাকি টাকা চুরির খাতে চলে যায়। সংস্থা কর্তৃপক্ষের দাবি, মানুষ যাতে মিটার নিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, লাগাতার তার প্রচার চালানো হচ্ছে। তবু অনেক জায়গাতেই চুরি আটকানো যাচ্ছে না।