স্বর্ণ প্রকল্পে বহু কোটি ‘হাতিয়ে’ বন্ধ সংস্থাই

প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো একটি অলঙ্কার বিক্রেতা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। টালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রায় শ’দুয়েক আমানতকারী।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৬ ০০:৪৫
Share:

প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো একটি অলঙ্কার বিক্রেতা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১৫-২০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। টালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রায় শ’দুয়েক আমানতকারী। তাঁদের কষ্টার্জিত টাকা এ ভাবে বেহাত হয়ে যাওয়ায় অনেকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সংস্থার মালিকপক্ষ ফেরার।

Advertisement

বছর চারেক আগে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের ওই সংস্থা ‘ধনবৃদ্ধি’ ও ‘ধনতৃষ্ণা’ নামে এক বছর মেয়াদের দু’টি আর্থিক প্রকল্প আনে। শর্তানুযায়ী, ১১ মাস ধরে মাসে মাসে আমানতকারীদের টাকা জমা দেওয়ার কথা। এক বছর পরে ওই টাকা ও তার ১০ শতাংশ সুদ মিলিয়ে মোট যত হবে, তার সম মূল্যের সোনার গয়না আমানতকারীকে ফেরত দেওয়ার কথা।

পুলিশ জানায়, ২০১২-এ প্রকল্প চালু হওয়ার পরে ২০১৪-র নভেম্বর পর্যন্ত আমানতকারীরা টাকা জমিয়ে তার বদলে গয়না পেয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, তার পরে যাঁরা টাকা জমিয়েছেন, অনেকেই কিছু পাননি।

Advertisement

সম্প্রতি রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে দোকানটির ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার পরে সংস্থার তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, টালিগঞ্জ এলাকায় একটি অফিস খোলা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও কোনও অফিস নেই বলে আমানতকারীদের অভিযোগ।

এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘এমন প্রকল্পের জন্য সেবি বা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন প্রয়োজন নেই। একমাত্র রেজিস্ট্রার অব কোম্পানির অনুমোদন দরকার।’’ জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে প্রায় সব বৃহৎ অলঙ্কার তৈরির প্রতিষ্ঠানই এমন নানা প্রকল্পের মাধ্যমে আমানত সংগ্রহ করছে। পুলিশের অনুমান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মেয়ের বিয়ের কথা ভেবে আমানতকারীরা কষ্টার্জিত টাকা অলঙ্কার সংস্থাগুলিতে জমা করেন।

রাজ্য স্বর্ণ বাঁচাও কমিটির এক সদস্য জানান, এ ভাবে বিশ্বাসযোগ্য সংস্থার কাছে প্রতারিত হলে বড় সমস্যা দেখা দেবে। কমিটির রাজ্য সম্পাদক বাবলু দে বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওই সংস্থার কর্তাদের গ্রেফতার করা উচিত। তবে একটি সংস্থা প্রতারণা করলে বাকিগুলিও একই পথে হাঁটবে, এমন ভেবে নেওয়া ঠিক নয়।’’

তদন্তকারীরা জেনেছেন, অভিযুক্ত ওই সংস্থার কর্তারা আরও কয়েকটি সংস্থা খুলেছেন। এমনকী, সংস্থার মালিকেরা কয়েকটি সম্পত্তিও কিনেছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই সম্পত্তির বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। সেগুলি কেনার জন্য আমানতকারীদের টাকা ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন