মানব পাচার রুখতে আন্তর্দেশীয় উদ্যোগের সওয়াল আলোচনায়

মানব পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান কী ভাবে সম্ভব? আমেরিকা ও ভারতে লিঙ্গ বৈষম্যের স্বরূপ কেমন?— ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে এল সম্প্রতি কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ১৬:৫৩
Share:

আমেরিকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা আইনজীবী ভিভিয়ান হুয়েলগো।

মানব পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান কী ভাবে সম্ভব? আমেরিকা ও ভারতে লিঙ্গ বৈষম্যের স্বরূপ কেমন?— ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্ন উঠে এল সম্প্রতি কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায়। উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী তথা আইনজীবী ভিভিয়ান হুয়েলগো, কলকাতায় আমেরিকার জনসংযোগ আধিকারিক অ্যান্ড্রু পোসনার ও দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

‘‘সমস্যার মোকাবিলায় দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে একযোগে কাজ করা দরকার’’, বলে আলোচনার মূল সুরটি বেঁধে দেন অ্যান্ড্রু। এরপরই মার্কিন মুলুকে মানব পাচারের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন ভিভিয়ান। সীমান্তবর্তী দেশগুলি থেকে তো বটেই, আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যেও পাচারের ঘটনা ঘটছে বলে তাঁর মত। আলোচনায় বারবার উঠে আসে, পাচার হওয়া নাবালিকাদের যৌন ব্যবসায় যোগ দিতে বাধ্য করার মতো একাধিক ঘটনার কথা। মার্কিন মুলুকে বিভিন্ন কারখানায় নিযুক্ত শ্রমিকদের মধ্যেও অনেকে বিভিন্ন প্রদেশ থেকে পাচার হয়ে এসেছেন। রয়েছে শিশু পাচারের মতো ঘটনাও। সে দেশের ফেডারেল আইনে কী ভাবে মানব পাচারকে দেখা হয় তারও সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন ভিভিয়ান।

মানব পাচারের মতোই যৌন নির্যাতন, কর্মক্ষেত্রে মহিলা কর্মীদের হেনস্থা-সহ লিঙ্গ বৈষম্যের বিভিন্ন দিকও উঠে আসে আলোচনায়। অপরাধ ঠেকাতে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের আরও বেশি সচেতন ও মানবিক হওয়া দরকার বলে মত দু’দেশের বক্তাদেরই। পাচার হওয়া নারী, শিশুদের পুনরুদ্ধারের পর তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য পরিবারের কাউন্সিলিং, আইনি সাহায্য-সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর জোর দেন বক্তারা।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, নদিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলি থেকে প্রতিনিয়ত পাচারের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, বছরে গড়ে ২৮ হাজারেরও বেশি নারী পাচারের ঘটনা ঘটছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলি থেকে। ভারতবর্ষে পাচারের প্রধান কারণ হিসেবে দারিদ্রকেই চিহ্নিত করেন বক্তারা।

লিঙ্গ বৈষম্য ও মানব পাচারের মতো বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে রাঁচি, শিলিগুড়ি-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় আলোচনাচক্র আয়োজন করার কথা জানান অ্যান্ড্রু। তা ছাড়া আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে যৌথ ভাবে লিঙ্গ বৈষম্য প্রতিরোধে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে বলে আমেরিকান কনস্যুলেট সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন