ঠিকানা বদল হয়েছিল বন্দিদের। কিন্তু বদলায়নি ‘পুষ্যি’দের বাসা। আলিপুর সংশোধনাগার চত্বরে থাকা প্রায় কয়েকশো ‘পুষ্যি’ বেড়ালেরা খাবে কী, কোথায় যাবে তারা— তা নিয়ে তাই চিন্তায় ছিলেন অনেক বন্দি। অবশেষে ‘অনাথ’ হয়ে যাওয়া মার্জার বাহিনীর মধ্যে ৮২টি বেড়ালকে আশ্রয় দিল সরশুনার একটি পশু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের বন্দিদের স্থানান্তরিত করা হয়েছিল বারুইপুর সংশোধনাগারে। সে সময়ে ১৫-২০টি বেড়ালকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন বন্দি। কিন্তু আলিপুর চত্বরে বেড়ে ওঠা বাকি ২৮০টি বেড়াল রয়ে গিয়েছিল সেখানেই। ওই মার্জার বাহিনীর পুর্নবাসনের জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন বন্দিরা। সেই আবেদনে সাড়া দেওয়া সম্ভব না হলেও বেড়ালদের নতুন ঠিকানা পাইয়ে দিতে সচেষ্ট হয় কারা দফতর। সেই চেষ্টাতেই সাড়া দিয়ে সরশুনার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রবিবার সকালে এআইজি (কারা) বিপ্লব দাস এবং বারুইপুরের জেল সুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষের উপস্থিতিতে আলিপুর সংশোধনাগার চত্বরে থাকা ৮২টি বেড়ালকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছে। এখন থেকে তাদের থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব ওই সংস্থারই।
ওই সংস্থার এক কর্তা জানিয়েছেন, আলিপুর জেলের বেড়ালদের পুনর্বাসনের জন্য এক সেনা অফিসারের তরফে অনুরোধ করা হয়েছিল তাঁদের কাছে। এর পরেই তাঁরা কারা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জেল চত্বরে ৩০০টির মতো বেড়াল থাকার খবর থাকলেও কয়েক দিন আগে সেখানে পৌঁছে সংস্থার কর্মীরা দেখেন, চত্বরে মাত্র ১০০টির মতো বেড়াল রয়েছে। সেই মতো এ দিন চত্বরের আনাচেকানাচে ঘোরাঘুরি করা ৮২টি বেড়ালকে তাঁরা ধরেন তাঁরা।
১১২ বছরের পুরনো আলিপুর সংশোধনাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে বেড়ে ওঠা ওই বেড়ালেরাই ছিল বন্দিদের সঙ্গী। জেলের মেডিক্যাল চৌকা, ৬ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পাশেই বেশি আনাগোনা ছিল ওই বেড়ালদের। কারা কর্তাদের একাংশের মতে, বন্দিদের স্থানান্তরিত করার পরে খাবার না পেয়ে জেল চত্বরে আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে বেড়ালের সংখ্যা। তাঁদের মতে, জেলের মূল ফটক বন্ধ হওয়ার সময়েই বেশ কিছু বেড়াল বাইরে বেরিয়ে যায়। পরেও কিছু বেড়াল অন্যত্র চলে যায়। শেষ পর্যন্ত সংশোধনাগার চত্বরে ১০০টির মতো বেড়াল ছিল। কারা দফতর সূত্রের খবর, আলিপুর জেল বন্দি-শূন্য হওয়ার পরে কখনও কখনও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে খাবার আসত বেড়ালদের জন্য। তাতেই পেট ভরত তাদের।