এলাকার মূল রাস্তাগুলিতে নজরদারি থেকে নিরাপত্তা— সবই জোরদার। কিন্তু নিউ টাউনের মূল রাস্তাগুলি থেকে আশপাশের ছোট রাস্তায় ঢুকলেই গা ছমছম করবে। বেশির ভাগ রাস্তাই জনমানবশূন্য। পাশে চলছে একের পর এক বহুতলের নির্মাণকাজ। এক জন কিংবা দু’জন করে কেয়ারটেকার রয়েছেন এক একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির দেখভালের জন্য।
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, নিউ টাউনের ওই সব রাস্তা কিংবা নির্মীয়মাণ বাড়িগুলির উপরে প্রশাসনের কোনও নজরদারি নেই। এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও। তাঁদের কথায়, জনসংখ্যার নিরিখে এবং আয়তনে ক্রমশ বাড়ছে নিউ টাউন। ফলে একটি থানার পক্ষে সব জায়গায় একই ভাবে নজরদারি চালানো মুশকিল হয়ে পড়ছে। তাই আরও তিনটি থানা তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সরকারের কাছে।
নিউ টাউনে সম্প্রতি বেশ কিছু অপরাধ ঘটার পরে আরও জোরালো হয়েছে নজরদারি জোরদার করার দাবি। সম্প্রতি একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির কাছে মদ্যপান করছিলেন কয়েক জন যুবক। প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হন একটি বাড়ির কেয়ারটেকার ও তাঁর সন্তান। তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে ওই কেয়ারটেকারের স্ত্রীও দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন। তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, আকাঙ্খা মোড় থেকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজারহাটে যাওয়ার রাস্তা, ইকো পার্কের পিছনের এলাকা, নিউ টাউন থেকে যাত্রাগাছি ও কেষ্টপুর যাওয়ার রাস্তাতেও তেমন নজরদারি চোখে পড়ে না। একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির কেয়ারটেকার বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে রাস্তা সুনসান হয়ে যায়। তখন রাস্তায় বেরোতে ভয় লাগে। রাতে পুলিশের গাড়ি সে ভাবে চোখে পড়ে না। তবে কোনও প্রয়োজনে খবর দিলে পুলিশ দ্রুত চলে আসে।’’ বিধাননগরের এক বাসিন্দা সুমিত বসু বলেন, ‘‘নিউ টাউনে ফ্ল্যাট কিনেছি। নিউ টাউনের অবস্থা দেখলে সল্টলেকের শুরুর দিনগুলির কথা মনে পড়ে। লোকবসতি বাড়লে আশা করি প্রশাসনের নজরদারি বাড়বে।’’
নিউ টাউনের সর্বত্র এখনও বসতি গড়ে ওঠেনি। তবে জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। আবার ফাঁকা জায়গায় অপরাধমূলক কাজকর্মও চলছে। এই দু’টি বিষয় চিন্তায় রেখেছে পুলিশকে। পুলিশে দাবি, নিউ টাউনের প্রতিটি রাস্তায় নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা হয়েছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই জনসংখ্যা ও আয়তন বৃদ্ধির কথা ভেবে নিউ টাউন থানার সঙ্গে আরও তিনটি থানা তৈরির প্রস্তাব রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। থানা তৈরির জমিও চিহ্নিত হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলেই কাজ শুরু হবে। সল্টলেকের ধাঁচেই নিউ টাউনে চারটি থানার আওতায় নজরদারি ও নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে।