আত্মঘাতী হয়েছেন অন্তরা, ইঙ্গিত দিচ্ছে ময়না-তদন্ত

গত ২৮ নভেম্বর রাতে বাগুইআটি এলাকার রঘুনাথপুরের একটি ফ্ল্যাটে অন্তরার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার বাবা রণজিৎ আচার্যের অভিযোগ ছিল, অন্তরার স্বামী সুরজিৎ সরকার শারীরিক ভাবে সক্ষম নন। তবু সন্তান না হওয়ার জন্য তাঁর মেয়েকেই কাঠগড়ায় তুলতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২৮
Share:

অন্তরা আচার্য।—ফাইল চিত্র।

বাগুইআটির তরুণী অন্তরা আচার্যের (৪০) দেহের ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে আত্মহত্যার ইঙ্গিতই জোরালো হল। তবে পুলিশ বলছে, এই পদক্ষেপের পিছনে স্বামী-সহ বাকি অভিযুক্তদের কী ভূমিকা ছিল, তা বোঝার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

গত ২৮ নভেম্বর রাতে বাগুইআটি এলাকার রঘুনাথপুরের একটি ফ্ল্যাটে অন্তরার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতার বাবা রণজিৎ আচার্যের অভিযোগ ছিল, অন্তরার স্বামী সুরজিৎ সরকার শারীরিক ভাবে সক্ষম নন। তবু সন্তান না হওয়ার জন্য তাঁর মেয়েকেই কাঠগড়ায় তুলতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার ময়না-তদন্তের যে প্রাথমিক রিপোর্ট পুলিশের হাতে এসেছে, তাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলেই অন্তরার মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অন্তরা কেন এই পদক্ষেপ করলেন, তার ইঙ্গিত সুইসাইড নোটে রয়েছে বলেই মত তদন্তকারীদের। বস্তুত, মঙ্গলবার বিকেলে রঘুনাথপুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটের একটি লাইনে তদন্তকারীদের চোখ আটকে গিয়েছে। তাতে লেখা ছিল, ‘আমার স্বামীর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছি’। পুলিশ সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে অন্তরারই হাতের লেখা কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেই অত্যাচারের মাত্রা কেমন ছিল, তা জানতে মৃতার বন্ধুদের তালিকা তৈরি করে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুরজিতের বন্ধুদেরও একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

তদন্তকারীদের মতে, গত পাঁচ মাসে অন্তরার মানসিক পরিস্থিতি কেমন ছিল, তা বোঝার জন্য তাঁর দু’টি ফেসবুক পোস্টই যথেষ্ট। জুলাইয়ে অন্তরা একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন যার বক্তব্য হল, ‘আমি হারিয়ে গেলেও ভয় নেই, খোঁজার মতো কেউ নেই। আমি কষ্ট পেলেও ভয় নেই, কষ্ট বোঝার কেউ নেই। এসেছি একা, চলেও যাব, একদিন ঠিক একা’! অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে তাঁর আর একটি পোস্টের বক্তব্য হল, ‘মায়া বাড়িয়ে যখন লাভ হয় না, তখন মায়া কাটাতে শিখতে হয়’! মানসিক চাপের কারণে অন্তরা নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেতেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু। তাঁদের দাবি, আলাদা ঘরে থাকতেন স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু মেয়ের মনের এই অবস্থার কথা কি টের পাননি তাঁর বাবা-মা, তা নিয়েও চিন্তিত তদন্তকারীরা। এ দিন অন্তরার বাবা রণজিৎ আচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘মঙ্গলবার মাম্পিকে বিরাটির বাড়িতে নিয়ে আসবে বলে ওর মা ঠিক করেছিলেন। এখানে থাকার তো কোনও অসুবিধা ছিল না। ভরসা করে মনের অবস্থাটা বলল না। কী করব!’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement