জলাশয় ভরাট করা যাবে না, বললেন শোভন

তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনও জলাশয় ভরাট বা জলাশয়ের চরিত্র বদল করতে দেবেন না বলে বিধানসভায় আশ্বাস দিলেন পরিবেশমন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনও জলাশয় ভরাট বা জলাশয়ের চরিত্র বদল করতে দেবেন না বলে বিধানসভায় আশ্বাস দিলেন পরিবেশমন্ত্রী এবং কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। অথচ, এ দিনই তিনি জানান, নতুন করে পূর্ব কলকাতা জলাভূমির ব্যবহার নিয়ে রামসার কনভেনশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। এই জলাভূমির জমি সুষ্ঠু ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করতে চাইছেন পরিবেশ মন্ত্রী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আগামী মার্চ মাসে রামসার কনভেনশনের প্রতিনিধিরা ছাড়াও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় বসব। এই জমির ব্যবহার নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা দরকার।’’

Advertisement

‘দ্য ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস (কনজার্ভেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৭’ সোমবার বিধানসভায় পাশ হয়েছে। বিরোধীরা এই সংশোধনী বিলে অংশ নেয়নি। বিলের সপক্ষে শাসক দলের তরফে স্বর্ণকমল সাহার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘‘ই এম বাইপাসের ধারে প্রচুর নির্মাণ হয়ে রয়েছে। সেখান থেকে কর আদায় করা যাচ্ছিল না। পুরসভা মিউটেশন করতে পারছিল না। এ ব্যাপারে আগের কমিটির সক্রিয় কোনও ভূমিকাও ছিল না।’’ ওই জলাভূমিতে একের পর এক নির্মাণ যে হয়েই যাচ্ছে, তা কার্যত স্বীকার করে শোভনবাবু বলেন, ‘‘বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রেখে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এলাকার উন্নয়ন করব। আমি থাকাকালীন কোনও জলাশয় ভরাট বা তার চরিত্র বদল হতে দেব না। কথা দিচ্ছি।’’

শোভনবাবু জানান, পুর পরিষেবামূলক কাজেও যেমন কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পে ভূগর্ভস্থ নিকাশি প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাঙ্ক অথবা এশীয় ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ঋণ বরাদ্দ করে। কিন্তু এই সমস্ত কাজ আটকে থাকার ফলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের। জঞ্জাল অপসারণের জন্য এখানে নতুন করে কোনও জায়গা চিহ্নিত করা যায়নি। ফলে, শহরের কঠিন বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে এই জলাভূমির পরিবর্তে বিকল্প ব্যবস্থার কথা কলকাতা ভাবছে পুরসভা। শোভনবাবু জানান, জঞ্জাল অপসারণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর
উদ্যোগে রাজারহাটে ২০ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে।

Advertisement

বামেদের তৈরি এই আইনটিতে আগে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। এখন সংশোধনীর ফলে পরিবেশমন্ত্রী চেয়ারম্যান হলেন। আগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান-সহ দু’জন এবং নগরোন্নয়নের প্রধান সচিব সদস্য ছিলেন। কিন্তু সংশোধনীর পরে এখন দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও নগরোন্নয়নের কোনও প্রতিনিধি রাখা হল না।

বিলে অংশ না নিলেও পরে বামেদের তরফে মানস মুখোপাধ্যায় এবং সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল জমানায় জলাশয় কমছে। পূর্ব কলকাতার জলাশয় বুজিয়ে তৈরি করা ২৫ হাজার বেআইনি বাড়িকে বৈধ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। সেই দলেরই মন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করার অর্থ তো ভক্ষককে রক্ষক করাই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন