বহুতল দখলে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব মানছেন না সৌরভ

বাবা আইনজীবী। তিনি নিজেও পড়াশোনা করেছেন আইন নিয়েই। যদিও আইনের পেশায় না থেকে বেছে নিয়েছেন ব্যবসা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

জামিন পাওয়ার আগে আদালতের পথে সৌরভ। শুক্রবার। — নিজস্ব চিত্র

বাবা আইনজীবী। তিনি নিজেও পড়াশোনা করেছেন আইন নিয়েই। যদিও আইনের পেশায় না থেকে বেছে নিয়েছেন ব্যবসা।

Advertisement

সেই ব্যবসায়ীই সৌরভ সাহা। গত ৮ বছরে প্রায় ন’ধরনের ব্যবসার সঙ্গে তিনি যুক্ত। তার মধ্যেই একটি নাদিয়া হেলথকেয়ার। ওই সংস্থাই একটি নামী জিমের ফ্র্যাঞ্চাইজি নেয়। বছর তিনেক আগে সল্টলেকের ওই বহুতলে শুরু হয় ওই জিম। সেখানে শরীরচর্চা করতে আসেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা।

সৌরভের বিরুদ্ধে বুধবার মাঝ রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা একটি বাণিজ্যিক বহুতল অচল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। দুপুরে সৌরভ-সহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শুক্রবার বিধাননগর আদালতে সকলেরই জামিন মঞ্জুর হয়।

Advertisement

ওই বহুতলের এক মালিক অনিতা তাঁতিয়ার অভিযোগ, প্রভাবশালী বলেই এক জন জিমের মালিক এমন ঘটনা ঘটাতে পেরেছেন। দশ বারো ঘণ্টা বহুতল আটকে রেখে দিলেন সৌরভ অথচ পুলিশ প্রথমে সক্রিয় হওয়ার সাহস দেখাতে পারল না। তবে এ দিনও নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বৃহস্পতিবারই অস্বীকার করেছিলেন সৌরভ। উল্টে বলেছিলেন, ‘‘ওই বহুতলের ভাড়ার গোলমাল নিয়ে মামলা চলছে। কিন্তু তার মধ্যেই নানা অছিলায় আমার ব্যবসার ক্ষতি করার চেষ্টা হচ্ছে। আমাকে ওই বহুতল থেকে উৎখাত করার চক্রান্ত চলছে। এই ঘটনা তারই অংশ।’’

এ দিন জামিন পাওয়ার পরে রাতে সৌরভ বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হলেও জিমে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি মেটেনি। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ জানাই। পুলিশকে বলেই মেরামতির কাজ শুরু করেছিলাম। নিরাপত্তারক্ষীদের কাছেও অনুরোধ করেছিলাম, যাতে কাজ চলাকালীন কোনও সমস্যা না হয়। আমাদের কেউ গেটও আটকায়নি। আমরা কোনও বাহুবলীও আনিনি। জিমের সদস্যেরাই ছিলেন। পুরো অভিযোগটিই ভিত্তিহীন।’’ এমনকী তাঁর দাবি, রাতভর ভাঙচুর, বহুতল আটকে রাখার কোনও লিখিত অভিযোগও হয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। এমনকী শুক্রবার সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করাও হয়েছে।

তা হলে কে বা কারা কার নির্দেশে বহুতল দখল করে গেট আটকে রেখেছিল? ২৪ ঘণ্টা পরেও সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি পুলিশের কাছে।

প্রশ্ন উঠেছে, সৌরভের কি আদৌ এত প্রতিপত্তি রয়েছে?

রাজনৈতিক মহলের খবর, ব্যবসার সূত্রে ২০০৯-এর পর থেকে সৌরভের সঙ্গে তৃণমূলের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠতা হয়। কাউন্সিলর, চেয়ারপার্সন থেকে বিধায়কদের সঙ্গে বাড়তে থাকে আলাপচারিতা। যদিও সৌরভের দাবি, ব্যবসা সূত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তা কোনও দিন ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেননি তিনি।

অন্য দিকে বিধাননগরের তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, কোনও ঘটনা ঘটলে এখন শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের নাম জড়িয়ে দেওয়া প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে দলের নেতাদের যোগাযোগ সম্পর্কে যা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন